আইনশৃঙ্খলা
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি আজ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিল শুনানি আজ। এই শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগে থেকেই মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দিন ধার্য রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে আজ (মঙ্গলবার) আবেদনগুলোর শুনানি হবে।
এর আগে, গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন বলে জানান আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে রিট খারিজ করেন। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে।
এরই ধারাবাহিকতায় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয় এবং ২০১১ সালের ৩ জুলাই সংশ্লিষ্ট গেজেট প্রকাশিত হয়।
এরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে, যা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় পরিবর্তন আনে।
সরকার পতনের পর সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট প্রথম পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। অন্য আবেদনকারীরা হলেন— প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ (প্রয়াত), এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া, জাহরা রহমান।
পরবর্তীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (১৬ অক্টোবর), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার (২৩ অক্টোবর) এবং নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন পৃথকভাবে একই ধরনের আবেদন জানান।
ফলে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক উদ্যোগ মিলিয়ে মোট চারটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের শুনানিতে রয়েছে।
২৭ আগস্ট শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ, যাতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলে, তা কখন থেকে কার্যকর হবে সে প্রশ্নও রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষে থাকা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, গেল দেড় দশকে দেশের মানুষ শাসিতের পরিবর্তে শোষিত হয়েছে নানাভাবে। মানুষ গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যা ও রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যেসব সিস্টেম ছিল— সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং মানুষ বিচার পায়নি। যার কারণে এই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। আর সেই রাজপথ থেকেই নির্ধারিত হয়েছে কে প্রধান বিচারপতি হবেন, আর কে সরকার প্রধান হবেন। জনগণের এই ক্ষমতাকে কোনোভাবেই অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। এসব অবজ্ঞা করলেই বিপ্লবের সৃষ্টি হয়।
সে সময় তিনি ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরেন।
পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়। আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ মঙ্গলবার।
আইনজীবীদের মতে, এই শুনানির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নতুন মোড় নিতে পারে। অনেকের প্রত্যাশা—আদালতের রায় দেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসন ও স্থিতিশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে।
৫৫ দিন আগে
আয়কর আইনের ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশ
আয়কর আইন, ২০২৩-এর ইংরেজি সংস্করণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশন আকারে প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
গেল বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩-এর স্বীকৃত ইংরেজি সংস্করণ (Authentic English Text) সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করে এনবিআর।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এনবিআর এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর থেকেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
‘আয়কর আইনের স্বীকৃত ইংরেজি সংস্করণ না থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।’
এবার আয়কর আইনের ইংরেজি সংস্করণ সরকারি গেজেটে প্রকাশ হওয়ার ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন। এতে করে করদাতাদের আস্থা আরও বাড়বে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২-এর ইংরেজি সংস্করণ সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খুব শিগগিরই এই দুটি আইনের ইংরেজি সংস্করণ সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে বলে আশা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
৫৮ দিন আগে
জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করলেই ওয়েবসাইট ব্লক, রোববার থেকে কার্যকর
অনলাইন জুয়া, পর্নোগ্রাফি ও অনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচার প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের জন্য নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মাদ জসিম উদ্দিনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জুয়া, বেটিং ও পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন ও প্রমোশনাল কনটেন্ট প্রচার করা হচ্ছে, যা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২-এর পরিপন্থী এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
এই ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সরকার একাধিক প্রজ্ঞাপন ও প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রোববার (১৯ অক্টোবর) থেকে যদি কোনো সংবাদপত্র (অনলাইন ভার্সনসহ), নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা ওয়েবসাইটে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত কনটেন্ট প্রচারিত হয়, তবে বিনা নোটিশে সেই সাইট ব্লক করে দেওয়া হবে।
সরকারের সতর্কতার পর ইতোমধ্যে ক্রিকইনফো, জনকণ্ঠ, ঢাকা পোস্টসহ আরও বেশ কয়েকটি পত্রিকা তাদের অ্যাডসেন্স পরিবর্তন করেছে উল্লেখ করে ওইসব প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার দেশের সাইবার স্পেসকে নিরাপদ, নৈতিক ও প্রজন্ম বান্ধব রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে। এ বিষয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ), জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) এবং বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যৌথভাবে কাজ করছে।
৫৮ দিন আগে
২০ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ইসির সংলাপ
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে আগামী ২০ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামী ২০ অক্টোবর পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্যদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকটি ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হবে।
ইসির চলমান সংলাপে বিগত কয়েকদিনে বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে সে ধারাবাহিকতায় সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচনি এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মতবিনিময় ও প্রাক প্রস্তুতিমূলক সভা ২০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত থাকবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ/কোস্টগার্ড/আনসার ও ভিডিপি/ডিজিএফআই/এনএসআই/এনটিএমসি/র্যাব মহাপরিচালক এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)/সিআইডির অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শককে সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আখতার আহমেদ আরও বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম কেনাকাটা প্রায় শেষ হয়েছে। পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্যান্য প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে ১১টি দেশে প্রবাসীদের নিবন্ধন কার্যক্রম চালু আছে। আরও আটটি দেশে এই কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধনের বিষয়ে আরও বেশি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নিবন্ধন দেওয়ার আগে স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের সম্পর্কে আরও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে এবং পত্রিকার নিউজও আমলে নেওয়া হচ্ছে।
৬২ দিন আগে
ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা
ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এম ই এস বিল্ডিং নম্বর-৫৪'কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এই আদেশ জারি করা হলো। আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গুমের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারিকৃত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে
মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, তাদের মধ্যে ১৪ জন কর্মরত কর্মকর্তা এবং একজন এলপিআরে, অর্থাৎ অবসরোত্তর ছুটিতে ছিলেন। এছাড়া মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ নামের আরেকজন সেনা কর্মকর্তা অদ্যাবধি অনুপস্থিত রয়েছেন। তার কোনো সন্ধান এখনও কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) দায়ের করা মামলাগুলো নিয়েই মূলত আলোচনা হয়।
গত বুধবার আওয়ামী লীগ আমলে সংঘটিত গুমের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে ২৫ জন সেনাবাহিনীর বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা। দুই মামলায়ই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকীর নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ: শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক শুরু
২৮ আসামির মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে নির্যাতনের অভিযোগ এবং ১৩ জনের বিরুদ্ধে যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল (জেআইসি)-এ নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
পরোয়ানা জারির দিনই তা সংশ্লিষ্ট ১৩টি দপ্তরে পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর কর্মকর্তারা। তবে মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান জানান, পরোয়ানার কপি এখনো সেনাসদরে পৌঁছায়নি। তারপরও তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, ‘২৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন এলপিআরে এবং ১৫ জন বর্তমানে সেনাবাহিনীতে কর্মরত। ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ১৬ জনকে সেনাসদরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৯ অক্টোবরের মধ্যে সেনাসদরে হাজির হয়েছেন ১৫ জন। তারা পরিবার থেকে আলাদা অবস্থায় থাকছেন। মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মাদ এখনও উপস্থিত নন।’
৬৩ দিন আগে
রাবি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যা মামলার সব আসামি খালাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জুলফিকার উল্লাহ এ চাঞ্চল্যকর মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম জানান, সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সবাইকে খালাস দিয়েছেন। মামলার ১১৪ আসামির মধ্যে ৯ জন মারা গেছেন এবং জীবিত ১০৫ জনের মধ্যে রায় ঘোষণার সময় ২৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহ মখদুম হল এলাকায় ছাত্রলীগ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন নিহত হন। পরদিন তার লাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ম্যানহোলে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় জামায়াত-শিবিরের ৩৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ২০–২৫ জনকে আসামি করা হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৮ জুলাই পুলিশ ১,২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। এতে জামায়াতে ইসলামী’র তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, রাজশাহী মহানগরের তৎকালীন আমির আতাউর রহমান, রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সেক্রেটারি মোবারক হোসেনসহ ১১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর বিচারপ্রক্রিয়া শেষে অবশেষে রবিবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, ‘রায়ে খুশি-অখুশি এখনই বলা যাবে না। রায়ের কপি হাতে পেলে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হবে।’
৬৪ দিন আগে
আমার ছেলেমেয়ে দেশে, আমি একা সেফ এক্সিট নিয়ে কী করব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সম্প্রতি উপদেষ্টারা সেফ এক্সিট চাচ্ছেন—এমন একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তার ছেলেমেয়েরা সবাই দেশেই আছেন। তিনি একা একা সেফ এক্সিট নিয়ে কী করবেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট প্রসঙ্গে তিনিও এমন কিছু চান কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘কে কী চায় সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আমার ছেলেমেয়ে সবাই দেশে। আমি একা সেফ এক্সিট নিয়ে কী করব?’
এরপর বেহাত হওয়া কতগুলো অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আইজিপির সঙ্গে কথা বলে পরের সভায় হয়তো জানাতে পারব।’
আরও পড়ুন: আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার বদ্ধপরিকর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নির্বাচনের সময় কেউ যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘সব অস্ত্র সব সময় উদ্ধার হয় না, কিছু অস্ত্র তো বাইরে থাকে। এজন্যই তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজন হয়। যদি সব অস্ত্র উদ্ধার হয়ে যেত, তাহলে তো আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগত না, নির্বাচন স্বাভাবিকভাবেই হয়ে যেত। কোনো ধরনের অসুবিধা নেই। আল্লাহ চাইলে ভালোভাবে নির্বাচন হবে।’
এদিকে, অভিযুক্ত সেনাবাহিনীর সদস্যদের সেনাবাহিনীর হেফাজতে রেখেই বিচারকার্য করার কথা উঠছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আইনে যেটা আছে, সেটাই করা হবে।
৬৪ দিন আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধ: শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ যুক্তিতর্ক হয়। প্রথমে প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, প্রথমে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছে প্রসিকিউশন। এরপর নিজেদের যুক্তি তুলে ধরবেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। শেষ পর্যায়ে যুক্তি খণ্ডন করবে প্রসিকিউশন বা রাষ্ট্রপক্ষ। এ ধাপ শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হবে।
ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ মামলায় বিচার শুরুর পর মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয় গত ৮ অক্টোবর। ওই দিন মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে তৃতীয় দিনের মতো জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এরপর যুক্তিতর্কের জন্য দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন আমির হোসেন। আর তদন্ত কর্মকর্তার এই জেরা শুরু হয় ৬ অক্টোবর।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর। তিনি এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৫৪তম বা সর্বশেষ সাক্ষী। জবানবন্দিতে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে গত বছরের জুলাই আন্দোলন চলাকালীন ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যকাণ্ড ও ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
২৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দিনের মতো জবানবন্দি দেন এই তদন্ত কর্মকর্তা। সেদিনও বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি নিজের জব্দ করা জুলাই আন্দোলনের নৃশংসতা নিয়ে যমুনা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন প্রদর্শন করা হয় ট্রাইব্যুনালে। এছাড়া গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়। এমনকি জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর তিন লাখ পাঁচ হাজার গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন তিনি।
২৮ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীরের জবানবন্দি শুরু হয়। ওই দিন তার জব্দ করা ১৭টি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শিত হয়। এসব ভিডিওতে জুলাই-আগস্টের নির্মমতা ফুটে ওঠে।
২৪ সেপ্টেম্বর এ মামলার ২২তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন সাক্ষ্য দেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। পরে তাকে জেরা করেন আমির হোসেন।
মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। নিজের দায় স্বীকার করে তিনি আগেই হয়েছেন রাজসাক্ষী।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা ও কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার।
এই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে মামলার প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।
৬৪ দিন আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে
গুম ও খুনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসের মেস-১-এ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।
মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, তাদের মধ্যে ১৪ জন কর্মরত কর্মকর্তা এবং একজন এলপিআরে, অর্থাৎ অবসরোত্তর ছুটিতে ছিলেন। এছাড়া মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ নামের আরেকজন সেনা কর্মকর্তা অদ্যাবধি অনুপস্থিত রয়েছেন। তার কোনো সন্ধান এখনও কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) দায়ের করা মামলাগুলো নিয়েই মূলত আলোচনা হয়।
গত বুধবার আওয়ামী লীগ আমলে সংঘটিত গুমের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে ২৫ জন সেনাবাহিনীর বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা। দুই মামলায়ই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকীর নাম রয়েছে।
২৮ আসামির মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে নির্যাতনের অভিযোগ এবং ১৩ জনের বিরুদ্ধে যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল (জেআইসি)-এ নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
পরোয়ানা জারির দিনই তা সংশ্লিষ্ট ১৩টি দপ্তরে পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর কর্মকর্তারা। তবে মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান জানান, পরোয়ানার কপি এখনো সেনাসদরে পৌঁছায়নি। তারপরও তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, ‘২৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন এলপিআরে এবং ১৫ জন বর্তমানে সেনাবাহিনীতে কর্মরত। ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ১৬ জনকে সেনাসদরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৯ অক্টোবরের মধ্যে সেনাসদরে হাজির হয়েছেন ১৫ জন। তারা পরিবার থেকে আলাদা অবস্থায় থাকছেন। মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মাদ এখনও উপস্থিত নন।’
কবীর আহাম্মাদের বিষয়ে তিনি আরও জানান, ‘৯ অক্টোবর সকাল থেকে তিনি বাসা থেকে বের হয়েছেন এবং তখন থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে বলা হয়েছে যেন তিনি দেশত্যাগ করতে না পারেন।’
মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও চায় গুম ও খুনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সঠিক বিচার হোক। সেনাবাহিনীর চায় ইনসাফ। ন্যায়বিচার বা ইনসাফের প্রশ্নে সেনাবাহিনী আপসহীন। সেনাপ্রধানেরও নির্দেশনা এমনই।’
মো. হাকিমুজ্জামান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এমন অনেক সেনসিটিভ কেসের মধ্য দিয়ে বিগত ৫৪ বছর পার করে এসেছে। যাদের নামে অভিযোগ উঠে প্রথমে তাদেরকে আমরা হেফাজতে নিয়ে নেই। তখন বিভিন্ন কোর্ট মার্শাল হয় কোর্ট মার্শালের রায় অনুযায়ী তখন বিচারের রায় অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
৬৫ দিন আগে
গুমের দুই মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুমের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং আরও ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপক্ষ বুধবার সকালে ট্রাইব্যুনাল-১-এ অভিযোগপত্র দাখিল করে। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগগুলো গ্রহণ করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন।
এর মধ্যে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের মামলায় ১৭ জন এবং জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) বন্দি রেখে নির্যাতনের মামলায় ১৩ জন আসামি।
দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকীকে।
দ্বিতীয় মামলায় ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।
টিএফআই সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আর জেআইসিতে বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
৬৮ দিন আগে