ইয়ুর্গেন ক্লপের সোনালী অধ্যায়ের পর আর্নে স্লট লিভারপুল সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় ছিল ভক্ত-সমর্থকদের মাঝে। তবে নতুন মৌসুমের প্রথম ম্যাচ জিতেই ‘স্লট অধ্যায়’ শুরু করেছে লিভারপুল।

শনিবার (১৭ আগস্ট) ইপসউইচের পোর্টম্যান রোড স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের যাত্রা শুরু করেছে লিভারপুল।

ম্যাচের ৬০তম মিনিটে মোহাম্মদ সালাহর অ্যাসিস্ট থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন দিয়োগো জোতা। এর পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সালাহ।

এর ফলে ২২ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসা ইপসউইচের শুরুটা হলো হার দিয়ে। আর প্রিমিয়ার লিগে স্লটের লিভারপুল অধ্যায়ের শুভ সূচনা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সামাজিক মাধ্যমে ভিএআর সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দেবে ইপিএল

প্রথমার্ধে অবশ্য লিভারপুলকে সমানে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গেছে ইপসউইচ। এতে সমর্থকদেরও হাততালি কুড়ান খেলোয়াড়রা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে লিভারপুলের স্কোয়াডের শক্তি-সামর্থ্যের কাছে হার মানতে হয় তাদের।

এদিকে, স্লটের তত্ত্বাবধায়নে সবকিছু নতুন লাগছে ম্যাচের সেরা ফুটবলার সালাহর কাছে।

ম্যাচ শেষে টিএনটি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে এখানে খেলা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল, বিশেষ করে আবহাওয়া উষ্ণ থাকায় বেশ বেগ পেতে হয়েছে। (ইপসউইচ) দল হিসেবেও ভালো খেলেছে। তবে শেষ পর্যন্ত জিততে পেরেছি, এটাই বড় ব্যাপার।

নবাগত দলের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখুন, তারা যখন নিজেদের মাঠে খেলে, তখন সবসময়ই প্রতিপক্ষের জন্য ম্যাচ জেতা কঠিন হয়ে যায়। তাদের সমর্থকরা সবসময়ই একটা আলাদা চাপে রাখে। এ বিষয়ে আমাদের আগেও অভিজ্ঞতা আছে। তাই এখানে ম্যাচটি যে সহজ হবে না- তা আগে থেকেই জানতাম।’

ম্যাচের দুটি গোলেই অবদান রাখতে পেরে আনন্দিত সালাহ। এ বিষয়ে তার মন্তব্য, ‘লিগের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকুক, এটাই চাওয়া। নিজে গোল করে হোক কিংবা অন্যকে দিয়ে গোল করিয়ে, দলের প্রয়োজনে নিজেকে কাজে লাগাতে আমি সবসময় চেষ্টা করি।’

আরও পড়ুন: প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাস নতুন করে লিখল ম্যানচেস্টার সিটি

আর্নে স্লটের তত্ত্বাবধায়নে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে এই ফরোয়ার্ড বলেন, ‘একেবারেই আলাদা এক অভিজ্ঞতা। গত আট বছর ধরে ইয়ুর্গেন এখানে ছিলেন। তিনি ক্লাবকে নিজের সবটা দিয়েছেন। এখন নতুন ম্যানেজার এসেছেন, ফলে তার সিস্টেম ভিন্ন হবে- এটাই স্বাভাবিক।’

‘আমাদের কাছে সবকিছুই এখন নতুন লাগছে। এসবের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব, তিনি ঠিক কোন দর্শনে ফুটবল খেলান- তা আমাদের বুঝে নিতে হবে। তাহলে আবারও আগের মতো খেলা উপভোগ করতে পারব।’

তবে শুরুতেই নতুন কোচকে খেলোয়াড়রা চাপ দিতে চান না বলে জানিয়েছেন সালাহ। বলেন, ‘তার ওপর কোনোরকম চাপই দিতে চাই না। আমরা শুধু নিজেদের খেলাটা খেলতে চাই, সেইসঙ্গে ফুটবলটা উপভোগ করতে চাই। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়!’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে সবাইকে অবাক করে দিয়ে লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণা দেন আট বছর ধরে লিভারপুলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠা জার্মান কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। সেসময় তিনি জানিয়ে দেন, মৌসুম শেষে ক্লাবটির দায়িত্বে আর থাকছেন না তিনি।

এরপর তার স্থলাভিষিক্ত হন ফেয়েনুর্ড বস আর্নে স্লট। তবে লিভারপুলের ৩০ বছরের প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা খরা কাটানো ক্লপের জায়গা তিনি ঠিক কতটা পূরণ করতে পারবেন, তা নিয়ে ফুটবল পাড়ায় কম আলোচনা হয়নি। শুধু প্রিমিয়ার লিগ নয়, পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটির দাপটের মধ্যেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ একাধিক ঘরোয়া লিগ জিতে অল রেড ভক্তদের মনে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন ক্লপ।

তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রাক-মৌসুমে ইতিবাচক ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেওয়া স্লট লিগেও দারুণ শুরু করলেন।

আরও পড়ুন: পা ভেঙে চার মাস মাঠের বাইরে সিটির তরুণ প্রতিভা