সেমি-ফাইনালে ওঠার সমীকরণ একটু সহজ করতে বড় জয় চাই ইংল্যান্ডের। আদিল রশিদের নিয়ন্ত্রিত স্পেলের পর দারুণ এক হ্যাটট্রিকে অধিনায়ক জস বাটলারকে আশ্বস্ত করলেন ক্রিস জর্ডান। তার হ্যাটট্রিকসহ পাঁচ বলে চার উইকেটে শেষের দিকে গুঁড়িয়ে গেছে স্বাগতিকদের ইনিংস।

টস জিতে এদিন যুক্তরাষ্ট্রকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠন বাটলার। শুরুতে ব্যাট করে ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতেই ১১৫ রানে অলআউট হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ব্যাট হাতে নীতীশ কুমার সর্বোচ্চ ৩০, কোরি অ্যান্ডারসন ২৯ ও হারমিত সিং ২১ রান করেছেন।

ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট নিয়েছেন ক্রিস জর্ডান। ২.৫ ওভারে ১০ রানের খরচায় চারটি উইকেট নিয়েছেন তিনি। এছাড়া আদিল রশিদ চার ওভারে ১৩ রানে এবং স্যাম কারান ২৩ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

জর্ডানের কল্যাণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে নবম হ্যাটট্রিক দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। শুধু তা-ই নয়, এদিন সকালে প্যাট কামিন্সের হ্যাটট্রিকের পর রাতে আরও একটি হ্যাটট্রিক দেখা গেল।

টি-টোয়েন্টিতে প্রথম কোনো ইংলিশ বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখালেন জর্ডান।

আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টিতে কামিন্সের বিরল কীর্তি

এছাড়া, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এক ওভারে চার উইকেট নিয়েছেন তিনি। এর আগে ২০২১ বিশ্বকাপে ডাচদের চার ব্যাটারকে ফেরান দক্ষিণ আফ্রিকার কার্টিস ক্যাম্ফার।

এদিন ১১৫ রানের মাথায় ছয় বলের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫টি উইকেট পড়ে।

ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও আউট হয়ে যান অ্যান্ড্রিস গাউস। ওভারের চতুর্থ বলে রিস টপলিকে ছক্কা হাঁকান তিনি। তবে শেষ বলে আবারও উড়িয়ে মেরে ডিপ স্কয়ার লেগ অঞ্চলে ফিলিপ সল্টের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ফলে দলীয় ৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র।

এরপর কয়েক ওভার দেখেশুনে খেলে পঞ্চম ওভারে গিয়ে হাত খোলেন নীতীশ কুমার। টপলির ওই ওভারে একটি করে ছক্কা ও চারে ১৩ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে স্যাম কারানকে চার মেরেই তার পরের বলে স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হন স্টিভেন টেইলর। ফলে বলটি ওপরে উঠে গেলে দৌড়ে গিয়ে লুফে নেন মঈন আলী। ১৩ বলে দুটি চারের সাহায্যে টেইলর ১২ রান করে ফিরে গেলে অধিনায়ক অ্যারন জোন্স মাঠে নামেন।

এসময় আবারও রানের গতি কমে যায় যুক্তরাষ্ট্রের। নবম ওভারে নিজের দ্বিতীয় ওভার বোলিং করতে আসেন প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান দেওয়া আদিল রশিদ। এসেই অধিনায়ক জোন্সকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি।

নিজের তৃতীয় ওভারে ফের উইকেটের দেখা পান রশিদ। একাদশ ওভারের চতুর্থ বলে নীতীশকে বোল্ড করেন তিনি। ২৪ বলে দুটি ছক্কা ও একটি চারে ৩২ করে নীতীশ ফিরে গেলে ৬৭ রানে চার উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

আরও পড়ুন: জটিল সমীকরণ সামনে রেখে বোলিংয়ে ইংল্যান্ড

এরপর মিলিন্দ কুমারকে নিয়ে কিছুটা বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেছিলেন কোরি অ্যান্ডারসন। তবে চতুর্দশ ওভারের শেষ বলে টপ এজ হয়ে উইকেটের পেছনে বাটলারের হাতে ধরা পড়েন মিলিন্দ। তারপর হারমিত সিং এসে কয়েক বল দেখে নিয়ে মারতে শুরু করলে তিনিও আউট হয়ে যান। ১৮তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে চার ও ছক্কা মেরে শেষ বলে ক্রিস জর্ডানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ১৭ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ২১ রান করে তিনি ফিরে গেলে ১৮ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১১৫ রান তোলে যুক্তরাষ্ট্র।

আর ওই উইকেট দিয়েই শুরু। পরের পাঁচ বলে চার উইকেট নিয়ে এখানেই ইনিংসে দাঁড়ি টেনে দেন ক্রিস জর্ডান।

১৯তম ওভারের প্রথম বলে কোরি অ্যান্ডারসনকে লং-অন অঞ্চল থেকে ক্যাচ নেন হ্যারি ব্রুক। এর পরের বলটি ডট গেলে তৃতীয় বলে ফের উইকেট পান জর্ডান। আলী খানকে বোল্ড করে দেন তিনি। পরের বলে নস্টুশ কেনজিগেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন। তার পরের বলে সৌরভ নেত্রাভালকারকে বোল্ড করে অসাধারণ বোলিং প্রদর্শনীর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ইনিসের ইতি টানেন এই পেসার।