সংক্রমণ এড়াতে অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণকারী দেশসহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই চলছে লকডাউন। বন্ধ রয়েছে কল-কারখানা, চলছে না ভারী যানবাহন। যার দারুণ প্রভাব পড়েছে প্রকৃতিতে।
করোনার মহামারির মধ্যে এপ্রিলের শুরুতে বরফে ঢাকা উত্তর মেরুর আকাশে ওজন স্তরে ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ বর্গ কিলোমিটারের একটি বিশাল গর্ত তৈরির কথা জানিয়ে ভয়াবহ আশঙ্কায় পড়েছিল বিজ্ঞানীরা। যা দক্ষিণের দিকে মোড় নিলে সরাসরি হুমকির মুখে পড়তো বিশ্ববাসী।
তবে কপারনিকাস অ্যাটমসফিয়ার মনিটরিং সার্ভিস (সিএএমএস) ও কপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সি৩এস) নিশ্চিত করেছে যে, নিজের ক্ষত নিজেই সারিয়ে তুলেছে পৃথিবী!
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন, আর্কটিকের ওপর যে বিশাল এলাকার ওজন স্তরে গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল, তার মধ্যে ১ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে গেছে।
সম্প্রতি সিএএমএস ও সি৩এস টুইটারে বায়ুমণ্ডলের নতুন কিছু ছবিও প্রকাশ করেছে, যেখানে ওজন স্তরের সেরে ওঠার বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে।
ওজন স্তর কী?
বিজ্ঞানীদের মতে, বায়ুমণ্ডলের ওপরের দিকে আছে ওজন স্তর, যা সূর্য থেকে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মিকে আমাদের এই পৃথিবীতে আসতে দিচ্ছে না। এই রশ্মিটি হচ্ছে আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন বা অতিবেগুনী তেজস্ক্রিয় রশ্মি।
অতিবেগুনী তেজস্ক্রিয় রশ্মির কারণে ত্বকের ক্যান্সার থেকে শুরু করে চোখেরও বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে। অর্থাৎ ওজন স্তর যদি না থাকে তাহলে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি আমাদের এই পৃথিবীতে এসে পৌঁছাবে যা মানুষ, প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকর।
নানা ধরনের কেমিকেল বা রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই ওজন স্তর, সেখানে বড় বড় গর্ত তৈরি হচ্ছে যা গলে পৃথিবীতে ঢুকে পড়ছে ক্ষতিকর রশ্মি। কিন্তু বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কল-কারখানা বন্ধ থাকায় এবং পৃথিবীতে দূষণের মাত্রা কমায় গর্তগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।