কয়েকদিনের কনকনে শীতে বোরো ধানের বীজতলা এবং সবজির ক্ষতি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন যশোর অঞ্চলের কৃষকরা। যদিও কৃষি বিভাগের বিশ্লেষণ এরকম আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়নি।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে না নামা পর্যন্ত ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না। বরং সবজির জন্য তা উপকারই হবে।
যশোরে গত ১৪ দিন ধরে তাপমাত্রা ওঠানামা করলেও গেল তিনদিন ধরে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। শেষ তিনদিনের কমে যাওয়া তাপমাত্রায় কাহিল হয়ে পড়েছে মানুষের দৈনন্দিন জীবন। এতে অনেক এলাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। শঙ্কা তৈরি হয়েছে কৃষকের মধ্যে। বিশেষ করে বোরো ও সবজি চাষিদের এক প্রকার ঘুম হারাম হতে যাচ্ছে। তাদের আশঙ্কা, অতিরিক্ত ঠান্ডায় বোরো বীজতলা, বোরো আবাদ ও সবজি নষ্ট হতে পারে।
আরও পড়ুন: বোরো হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বাড়াতে ৯০ কোটি টাকার প্রণোদনার ঘোষণা কৃষি মন্ত্রণালয়ের
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার বলেছেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামলে ফসলের ক্ষতি হবে। যা এখনও হয়নি। যে অবস্থা চলছে এটি স্থায়ী হলে বোরো ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। একইসঙ্গে বন্ধ করতে হবে সেচ দেওয়া। পলিথিন ঘেমে যে পানি বীজতলায় পড়বে তাতেই সেচের কাজ হবে। বীজতলার কোনো ক্ষতি হবে না।
উপপরিচালক আরও বলেন, এ ধরনের শীতে সবজির কোনো ক্ষতি হয় না। বরং উপকারই হবে। অনেক সময় কৃষক ভ্রান্তিতে পড়েন।
এদিকে, যশোরের আট উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ফসল সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। এছাড়া জানুয়ারি মাসের শেষ নাগাদ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক জমিতে বোরো লাগানোর কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন উপপরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাট চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু
সরেজমিনে সবজি খেত ঘুরে এখন পর্যন্ত কোনো সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি চোখে পড়েনি।
সাজ্জাদ হোসেন নামে এক চাষি বলেন, এখন পর্যন্ত আমার সবজি ও বোরো বীজতলা ঠিক আছে। বেশি কুয়াশা পড়লে আমি সকালে পানি দিয়ে ধুয়ে দিই। সাজ্জাদের মতো কৃষক ওহিদ, সেলিম, মেহেদীসহ আরও অনেকেই এটি করেন বলে তারা জানান।
রবিবার কনকনে শীতের মধ্যেও কৃষকের সবজি ও বোরো ধানের পরিচর্যা করতে দেখা যায়। যশোর বিমানবন্দরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটি আবহাওয়া দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, রবিবার সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে যশোরের তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এবং সন্ধ্যা ৬টায় ফের তাপমাত্রা কমে যায়। এ সময় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: বোরোতে উফশী ধানের উৎপাদন বাড়াতে ১০৮ কোটি টাকার প্রণোদনা: কৃষি মন্ত্রণালয়