কোটাবিরোধী আন্দোলন ও বিক্ষোভ মিছিল করার অভিযোগে তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবনসহ অর্ধশতাধিক বাংলাদেশিকে কারাদণ্ড দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি আদালত।
রবিবার (২২ জুলাই) ৫৩ বাংলাদেশি নাগরিককে ১০ বছরের কারাদণ্ড, তিনজনকে যাবজ্জীবন এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আবুধাবির রাষ্ট্রীয় আপিল আদালত।
সোমবার (২৩ জুলাই) দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আমিরাত নিউজ এজেন্সি (ডব্লিউএএম) জানিয়েছে, সাজার মেয়াদ শেষে তাদের সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সপ্তাহজুড়ে সংঘর্ষের পর স্বাভাবিক হচ্ছে বাংলাদেশ, নিহত ২০০: এপি
আদালতে একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী বলেন, আসামিরা বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বেশ কয়েকটি রাস্তায় জড়ো হয়ে বড় আকারের মিছিল বের করে।
শনিবার তাদের গ্রেপ্তার করে এ বিষয়ের তদন্ত ও দ্রুত বিচারের নির্দেশ দেয় দেশটির প্রশাসন।
কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশে বেশ কয়েকদিন বিক্ষোভ চলার পর আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করে।
কোটা আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট সহিংসতায় দেশজুড়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পর রবিবার (২১ জুলাই) হাইকোর্টের কোটা সংক্রান্ত আদেশ বাতিল করে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে পুনরায় কোটা বিন্যাস করে রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রায়ে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে এখন থেকে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে এবং বাকি ৭ শতাংশ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে বলা জানানো হয়। এর মধ্যে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ এবং বাকি ১ শতাংশ ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমিত পরিসরে খুলেছে অফিস-ব্যাংক; রাজধানীতে যানজট
শনিবার আরব আমিরাতের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এনেছে, যার মধ্যে রয়েছে- উন্মুক্ত স্থানে জড়ো হওয়া, অস্থিরতা উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ দেশের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বাধা দেওয়া, জানমালের ক্ষতি করা প্রভৃতি।
আরব আমিরাতে অবস্থানরত প্রবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিরা সংখ্যায় তৃতীয় বৃহত্তম। দেশটির মোট জনসংখ্যার (৯২ লাখের বেশি) মাত্র ১০ শতাংশ আমিরাতি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইন অনুযায়ী, সেখানে রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করা নিষিদ্ধ। আইনের মাধ্যমে দেশের জনগণের বাক স্বাধীনতাকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে দেশটির সরকার। সেখানকার প্রায় সব শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বা রাষ্ট্র-অনুমোদিত।