মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যারা ইউনিয়ন নেতাদের, শ্রমঅধিকার রক্ষাকারী ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে হুমকি দেয়, ভয় দেখায় ও হামলা করে তাদের জবাবদিহি করবে। এক্ষেত্রে তারা সম্ভাব্য সব উপায় যেমন- নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য জরিমানা, ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে বলে উল্লেখ করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি গার্মেন্টসকর্মী ও অ্যাকটিভিস্ট কল্পনা আক্তারের মতো মানুষের পাশে থাকতে চাই। তিনি বলেছেন মার্কিন দূতাবাস তাকে সমর্থন করেছে বলেই তিনি আজ বেঁচে আছেন।’
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ‘অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্স গ্লোবালি’-শীর্ষক প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডামের রোলআউটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, তারা যখন নিজেদের পক্ষে আওয়াজ তোলে, সারা বিশ্ব তাদের সমর্থন করে, তখন যারা শ্রম অধিকারকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তারা একটি সুনির্দিষ্ট পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমরা শ্রম দক্ষতাসহ কর্মীদের জন্য বৃহত্তর কাজের সুযোগকে অগ্রাধিকার দিয়ে, শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে জানার জন্য, আমাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদেশে কর্মী অধিকারকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ফেডারেল সরকারের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করব।’
তিনি বলেন, তারা শ্রম অধিকার ও মানোন্নয়নের জন্য সরকার ও জাতিসংঘের মতো বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি জি২০’র সঙ্গে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব দলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান ওয়াশিংটনের
তিনি আরও বলেন, ‘এসব আন্তর্জাতিক সংস্থায় আমরা যা করি কাজটি এর অংশ। এ বিষয়ে অনেক নিয়মকানুন রয়েছে। সারা বিশ্বে এগুলোর গভীর প্রভাব রয়েছে। আমরা সেসব দেশে গিয়ে নিশ্চিত হব যে আমরা শ্রমের পক্ষে কাজ করছি এবং আমরা আমাদের নিজস্ব বাণিজ্য চুক্তি, সরবরাহ চেইন, শ্রমিকদের সুরক্ষা ও বাধ্যতামূলক শ্রম দিয়ে তৈরি পণ্য আমদানি করছি না।
ব্লিঙ্কেন জানান, তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারের প্রতি সম্মান রক্ষা ও প্রচারের জন্য সরকার, শ্রমিক, শ্রম সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ ও বিশ্বব্যাপী বেসরকারি খাতকে নিযুক্ত করবে।
তিনি বলেন, ‘এর মানে হলো আমাদের সব রাষ্ট্রদূত ও বিশ্বজুড়ে আমাদের বিভিন্ন দূতাবাসে থাকা সব মানুষ; শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত থাকবেন। যাতে আমরা যা কিছু করি তাতে তাদের কণ্ঠ প্রতিফলিত হয়।’
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম থেকে ‘অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্স গ্লোবালি’- বিষয়ে মূল পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন শুরু করবে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট।
বৃহস্পতিবার ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, সাপ্লাই চেইন স্থিতিস্থাপকতাকে শক্তিশালী করা এবং আমেরিকান শ্রমিক ও কোম্পানির জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলো শ্রম অধিকার।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক ঘোষণা অনুসারে, এই নতুন সম্পূর্ণ-সরকারি পদ্ধতিটি কর্মীদের ক্ষমতায়ন ও ইউনিয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডামটি প্রথমবারের মতো মিশন প্রধান ও বিভাগের কর্মকর্তাদের সরাসরি শ্রম কূটনীতিতে কর্মসূচি বৃদ্ধি, শ্রমিক ও শ্রম অধিকারের বিষয়ে জনসাধারণকে তথ্য জানানোর নির্দেশ দেয়।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রমিকদের অধিকারের অগ্রগতির জন্য দপ্তরের প্রচেষ্টাগুলো ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব লেবারসহ ইন্টারএজেন্সি অংশীদারদের পাশাপাশি পরিচালিত হবে।
ঘোষণায় বলা হয়, ‘স্মারকলিপিটি প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা ও প্রতিশ্রুতিগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কূটনীতি, বিদেশি সহায়তা ও প্রোগ্রামিং, আইন প্রয়োগ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধ্যবাধকতা এবং প্রতিশ্রুতির উপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী শ্রমের মান বাড়ানোর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যানের সাক্ষাৎ
পিটার হাসকে হুমকির বিষয়ে সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে: মার্কিন দূতাবাস