প্রধার উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অন্তবর্তী সরকার রোহিঙ্গা সংকটকে আবারও আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় ফিরিয়ে এনেছে, যা আগের শাসনামলে প্রায় ‘ভুলে যাওয়া’ বিষয় হয়ে গিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘এই সংকটটি প্রায় ভুলে যাওয়া হচ্ছিল। অন্তবর্তী (ইন্টেরিম সরকার এটি আবার আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছে।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জনাব ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবও উপস্থিত ছিলেন।
আলম বলেন, সরকার এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করতে দৃঢ় প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং সফলও হয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, সমাধানের বদলে শেখ হাসিনা নিজেকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে উপস্থাপনে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। এতে বাস্তব কাজ হয়নি। বরং ইমেজ বিক্রির চেষ্টায় আসল সংকট আন্তর্জাতিক মহলের নজর থেকে সরে গেছে।
তিনি আরও জানান, ইন্টেরিম সরকার রোহিঙ্গা বিষয় সরাসরি দেখভাল করার জন্য ড. খলিলুর রহমানকে প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে নিয়োগ করেছে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে এখন সমগ্র বিশ্ব রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে সচেতন। আমরা আশা করি, আগামী দিনগুলোতে ইতিবাচক ফলাফল আসবে, যদিও তা এখনও দৃশ্যমান নয়।’
যদিও আট বছর পার হলেও একটি রোহিঙ্গাও ফেরত পাঠানো যায়নি এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় তাদের দুর্দশা এখনও অপরিবর্তিত। পরিস্থিতি উভয় পাশে আরও কঠিন হয়েছে, শিবিরে হতাশা বেড়েছে, স্থানীয় কমিউনিটির ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং বৈশ্বিক মনোযোগ ও মানবিক তহবিল কমে গেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ সাধারণ সভার সময় অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে’ ৭০টিরও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস একটি ৭-দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।
শফিকুল আলম বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মূলত মায়ানমারে উৎপন্ন হয়েছে এবং তাদের স্বেচ্ছায় নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়ার জন্য মায়ানমারের মধ্যে একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহায়ক ভূমিকায় থাকার জন্য আহ্বান জানান।