রাজধানীর ঢাকা কলেজের আবাসিক হলে একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তাকে অপহরণ করে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে মুক্ত হয়ে ওই কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানায় মামলা করায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুজন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান অয়ন সিগমাইন্ড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসম্পাদক জনি হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এস এম শফিক, ছাত্রলীগ কর্মী মো. গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্নব, মো. রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, মো. বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, মো. রায়হান, মাসুম, ফাহিম ও শাহীন। ঘটনায় জনি হাসান ও এসএম শফিককে আটক করেছে নিউমার্কেট থানা পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সিগমাইনফ প্রতিষ্ঠানটি মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ করে। অভিযুক্তরা ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে এবং ভুক্তভোগী মেহেদীর কাছে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিলো। চাঁদা না দেওয়ায় গত ২৫ মে সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা ব্রিজ সংলগ্ন পাকা রাস্তার মোড়ে থাকা দুইটি সিসি ক্যামেরা, সাতটি পাওয়ার ব্যাংক, পাঁচটি ক্যাবল, দুইটি ক্যামেরা স্ট্যান্ড খুলে নিয়ে আসে৷ পরে রাতে সিয়াম ও রমজান নামের ঢাকা কলেজের দুই ছাত্র ভুক্তভোগীকে ফোন করে বিষয়টি জানায় এবং এগুলো ফেরত পেতে হলে ঢাকা কলেজে আসতে হবে বলে জানায়। তখন প্রতিষ্ঠানটির স্টাফ মো. তৌকির জিনিসপত্র ফেরত নিতে আসলে তাকে আটক করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
অভিযুক্তদের কথামতো ভুক্তভোগী মেহেদী ঢাকা কলেজে আসলে তাকেও আটক করে মারধর করা হয়। এসময় ভুক্তভোগীদের থেকে নগদ টাকা, এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়।
পরে শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় জনি হাসান, এস এম শফিক সহ আরও একজন ভুক্তভোগীকে গাউছিয়া মার্কেট মোড়ে রেখে যায়।
উপস্থিত টহল পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী মেহেদীকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরে এই ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করে মেহেদী হাসান অয়ন।
মামলায় নাম থাকা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা যায়।
নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল গনি সাবু বলেন, জনি আর শফিক নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়াও চলছে।