পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে এবং ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধ করতে ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অনুরোধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটার দূষণ নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ ইটভাটা বন্ধকরণ এবং প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার রোধের লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকগণের সঙ্গে এক বিশেষ সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ) মিজানুর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডক্টর আবদুল হামিদ সহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। দেশের ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকগণ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
সভায় ইটভাটার দূষণ জনিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং অবৈধ ইটাভাটার বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থাসহ সভার কার্যপত্র উপস্থাপন করেন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপসচিব ডক্টর সৈয়দ শাহজাহান আহমেদ।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিল পরিবেশ অধিদপ্তর
সভায় সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইটভাটায় কৃষিজমির মাটির ব্যবহার, কৃষি জমি বিনষ্টকরণ বন্ধ করতে হবে। ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে গাছপালা কেটে কাঠ পোড়ানো বন্ধ করাসহ অবৈধ ও পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটাসমূহের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি এসময় সরকার ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ সকল সরকারি কাজে ১০০ ভাগ পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। ইটাভাটাসহ বিভিন্ন প্রকার দূষণ রোধের লক্ষ্যে সকল অংশীজনকে সংশ্লিষ্ট করতে জরুরিভিত্তিতে দেশের সকল জেলায় অবহিতকরণ সভা আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
সভায় সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার এবং মোড়ক বাজারজাতকরণ বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন পরিচালিত নিয়মিত এনফোর্সমেন্ট ও মোবাইল কোর্ট কার্যক্রম জোরদার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
কঠিন বর্জ্য সুব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলের ১২ জেলার ৪০টি উপজেলায় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে প্রণীত তিন বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা জরুরী ভিত্তিতে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় অবৈধ ইটভাটা ও প্লাস্টিক, পলিথিন বন্ধে কার্যকর উপায় গ্রহণ বিষয়ে উপস্থিত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকগণ নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেন।
তারা এসময় সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালা যুগোপযোগী করাসহ বিদ্যমান কিছু সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানান। ইটভাটার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান প্রতিপালনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান।