অভিবাসী কর্মীদের অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই পুনঃএকত্রীকরণের জন্য নীতি, সক্ষমতা ও সিস্টেমগুলোকে উন্নত করার বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশ সরকার আইএলওর সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ সরকার।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে এ চুক্তি সই হয়েছে। প্রকল্প সহায়তা দিয়েছে সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি)।
বিদেশ থেকে প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীরা যাতে বাংলাদেশের চাকরির বাজারে সহজে প্রবেশ করতে পারে এবং দেশের বাইরে অর্জিত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে তা নিশ্চিত করতে এই প্রকল্প কাজ করবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মীরা গন্তব্য দেশগুলোর অর্থনীতি গড়ে তুলছে এবং রেমিট্যান্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে। যদি তাদের প্রত্যাবর্তন এবং পুনঃএকত্রীকরণে যথাযথ সহায়তা করা হয়, তাদের অর্জিত দক্ষতা এবং সঞ্চয় বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হতে পারে।’
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন বলেন, ‘প্রত্যাগত অভিবাসীদের টেকসই পুনঃএকত্রীকরণের জন্য প্রয়োজন একটি অনুকূল নীতি পরিবেশ, বিদেশে অর্জিত দক্ষতার স্বীকৃতি, কর্মসংস্থান ও ব্যবসার সুযোগ সম্পর্কে তথ্য, আর্থিক সহায়তা, সামাজিক নিরাপত্তা ও মনোসামাজিক সহায়তা।’
গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার অভিবাসী কর্মী বিদেশে কাজ করার জন্য অভিবাসন করে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ এশিয়ার শীর্ষ শ্রমিক প্রেরণকারী দেশ হয়ে ওঠে, যেখানে ৬ লাখ ১৭ হাজার লোক কাজের জন্য বিদেশে পাড়ি জমায়। এই সংখ্যা ২০২২ সালে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১১ লাখ ৩৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে দেশের আয়ের তুলনায় অভিবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্স দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। পুনঃএকত্রীকরণ প্রকল্পটি সমন্বিত উপায়ে প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের কর্মসংস্থান ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন পরিষেবাগুলো পেতে সহায়তা করবে; যাতে তারা তাদের নিজ নিজ জেলায় অর্থনৈতিকভাবে উৎপাদনশীল হতে পারে।
সাক্ষী হিসেবে চুক্তিতে সই করেন বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স করিন হেনচোজ পিগনানি।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ছিলেন ইআরডি জাতিসংঘ শাখার প্রধান এ কে এম সোহেল, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড, পরিকল্পনা কমিশন এবং আইএলও’র কর্মকর্তারা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আইএলও প্রধান কারিগরি অংশীদার হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করবে। প্রকল্পের অন্যান্য অংশীদারদের মধ্যে রয়েছে আইওএম, ইউএন উইমেন, নিয়োগকারি সংস্থা ও শ্রমিকদের সংগঠন।