আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের(আইএমএফ) –এর একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে বুধবার ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। এ সময় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের চাওয়া সাড়ে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের শর্তাবলি নিয়ে আলোচনা করবেন।
প্রতিনিধি দলটি ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত আর্থিক খাত ও নীতির সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেবেন। দলটির নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশে আইএমএফ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ।
কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিনিধি দলের উদ্দেশ্য হল জলবায়ু ঝুঁকির বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা তৈরিতে সহায়তা করার লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদী ক্রেডিট লাইনের তহবিল দেয়ার বিষয়ে একটি কর্মী-স্তরের চুক্তির দিকে অগ্রগতি করা।
বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) থেকে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছিল। তবে এই পরিমাণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথেষ্ট কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার সংকট কাটিয়ে উঠতে আইএমএফ-এর ঋণ দেশের ভাবমূর্তি গড়ে তুলবে।
তারা বলছে, আইএমএফ থেকে ঋণ নিতে হলে শর্ত মানতে হবে।
এক দশক আগে ভ্যাট আইন প্রণয়ন করার শর্তে বাংলাদেশ সাত কিস্তিতে আইএমএফ থেকে প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি বর্ধিত ঋণ সুবিধা (ইসিএফ) পেয়েছিল।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সব উন্নয়নশীল দেশ দু’টি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে- প্রথমত, অর্থপ্রদানের ভারসাম্যে বড় ঘাটতি এবং দ্বিতীয়ত, বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারার কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এখানেই আইএমএফ একটি ভূমিকা পালন করতে পারে। আইএমএফের কর্মসূচি অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং আর্থিক নীতি সংস্কারের সঙ্গে সম্পর্কিত। সেই সংস্কারই হবে আসল জিনিস, যা আর্থিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবে।’
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) গভর্নর আবুর রউফ তালুকদার আইএমএফের শর্তাবলি সম্পর্কে সাংবাদিকদের কিছু ধারণা দেন। এগুলো হলো রাজস্ব প্রশাসনের
আধুনিকায়ন, রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা, জিডিপি অনুপাতে কর আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন আনা এবং খারাপ ঋণ কমানো।
আইএমএফ ভর্তুকি ও প্রণোদনা কমানোর শর্তও দিতে পারে।