অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় খুশি হবে।
তিনি বলেন, সরকারের প্রতি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়সহ জনগণের সহানুভূতি রয়েছে। কারণ, তারা রাজস্বের একটি বড় অংশ প্রদান করছে, যা দেশের উন্নয়নে অনেক অবদান রাখছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) ৪৩তম পরামর্শ সভায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে জনগণের চমৎকার অবদানেরও প্রশংসা করেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন গত বছরের সাড়ি তিন শতাংশ থেকে এ বছর দুই দশমিক ৯ শতাংশ কম হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশের বেশি। এটা সম্ভব হয়েছে জনগণের অসামান্য সহনশীলতার জন্য।
তিনি আশা করেন, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২০টি বৃহত্তম অর্থনীতির একটি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
ব্যবসায়ীদের উত্থাপিত বিভিন্ন সমস্যার জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম বলেন, রাজস্ব বোর্ড কর-রাজস্বকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ করতে চায় না বা ব্যবসার বিরুদ্ধে মামলা করতে চায় না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ট্যাক্স সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য দরজা খোলা রাখছি এবং সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য দয়া করে এনবিআরে আসুন।’
তিনি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে ব্যবসায়ীদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে কর ও ভ্যাট প্রদানের আহ্বান জানান।
আবু হেনা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন ইস্যুতে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যবসায়িকদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য, প্রযুক্তি গ্রহণ এবং দেশীয় শিল্পের উৎপাদনে উন্নতি করাই ভালো।
তিনি স্বীকার করেন যে এনবিআর এখন পর্যন্ত খুচরা ভ্যাট ও কর আদায়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি, তবে মোট খাত সংস্কারের মাধ্যমে একটি স্মার্ট সিস্টেম গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল অংশীদার: অর্থমন্ত্রী
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সিএমএসএমই, কর ছাড়, রপ্তানি সম্প্রসারণের জন্য বন্ড সুবিধা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থিতিশীল সরবরাহ চেইন রাখা, এনবিআরের আধুনিকায়ন, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস, প্রযুক্তিগত কর্মসংস্থানের পাশাপাশি কর্মসংস্থানমুখী শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়াসহ সাত দফা সুপারিশ করেছেন।
দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তার হাত বাড়াতে সরকার ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বাজেট পরামর্শ সভায় বিভিন্ন খাতের নেতারা, পেশাজীবী, অর্থনীতিবিদ, অর্থ মন্ত্রণালয় ও রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
আসন্ন বাজেটে বিবেচনার জন্য এফবিসিসিআই সভাপতি অর্থমন্ত্রীর কাছে ব্যবসা সংক্রান্ত একটি লিখিত প্রস্তাবও হস্তান্তর করেন।