অবৈধ সম্পদ গড়াসহ তথ্য গোপন করার অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের দুই মালিক আজাদ আহমেদ ও দিলদার আহমেদ সেলিমের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল ৩টার পর কমিশনের (দুদক) মুখপাত্র ও সচিব মো. মাহ্বুব হোসেন তাৎক্ষণিক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এ সময় তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় মামলা করা হবে।
তিনি বলেন, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দিলদার আহমেদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয় প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করা হয় ২০১৮ সালের ৬ জুনে। তিনি জুলাইয়ের ২ তারিখ সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দিলদার আহমেদের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৮৮ কোটি ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩০০ টাকার সম্পদের তথ্য দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ৮৯ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৮০ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। ফলে তিনি দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৬৪ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকার তথ্য গোপন করেছেন।
আর দিলদার আহমেদ সেলিমের মোট ৮৯ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৮০০ টাকার সম্পদের বিপরীতে মোট আয় পাওয়া যায় ৩৩ কোটি ৯৯ হাজার ৭৮ হাজার ৫৯১ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য ব্যয় ৪ কোটি ২৫ লাখ ১৭ হাজার ১৯৩ টাকা। ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ ৯৩ কোটি ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯৩ টাকা। ফলে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৫৯ কোটি ৭৬ লাখ ৫৬ হাজার ৪০২ টাকা। ফলে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় একটি মামলা রুজুর সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
দিলদার আহমেদ সেলিম সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করার দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারা এবং ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় কমিশন ১৯ অক্টোবর একটি মামলা রুজুর অনুমোদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশি হেফাজতে সাবেক দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু: পরিবারের অভিযোগ
অন্যদিকে আপন জুয়েলার্সের আরেক স্বত্ত্বাধিকারী আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১৮ সালের ৫ জুন সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করে, যা তিনি গত ১০ জুন গ্রহণ করে পরের মাসের ৭ তারিখে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে নিজ নামে ৯ কোটি ৩০ লাখ ৮৭ হাজার ৯০৫ টাকা মূল্যমানের স্থাবর এবং ৩২ কোটি ৩৫ লাখ ২২ হাজার ২৪৬ টাকা মূল্যমানের অস্থাবর সম্পদের হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া ৪১ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার ১৫১ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করা হয়।
যাচাই শেষে আজাদ আহমেদের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৬ কোটি ১৮ লাখ ৮২ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় একটি মামলা রুজুর সুপারিশ করা হয়েছে।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অর্জন করায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা রুজুর অনুমোদন দেয় দুদক।
আরও পড়ুন: কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো: দুদক কার্যালয়ে ড. ইউনূস