প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে তার সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলেছেন, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ তার দরজা বন্ধ রাখতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘ভারতকে আমরা ট্রানজিট দিলাম কেন- এটা নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। আমরা আগেই ট্রানজিট দিয়েছি।এতে ক্ষতিটা কি হচ্ছে। বরং আমরা রাস্তার ভাড়া পাচ্ছি। সুবিধা পাচ্ছে আমাদের দেশের মানুষ। অনেকে অর্থ উপার্জনও করছে। আমরা আমাদের দরজা বন্ধ রাখতে পারি না।’
বুধবার (৩ জুলাই) চলতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের (তৃতীয় অধিবেশন) সমাপনী ভাষণে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
তার সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে সমালোচকদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলো তার সফর নিয়ে অনেক কথা বলে চলেছে।
বাংলাদেশকে ট্রান্স-এশিয়া হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত থেকে নেপাল ও ভুটানে (পণ্য পরিবহনের জন্য) ট্রানজিট (সুবিধা) পেয়েছি।’
আরও পড়ুন: ২০৩৫ সালের মধ্যে হাইড্রোজেন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় বাংলাদেশ: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ভারতের আসাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পার্বতীপুর ডিপোতে জ্বালানি নিয়ে আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি কিনতে পারছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে নাটোরে জ্বালানি আনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ও এইচএম এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার শাসনামলে কীভাবে দেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছিল তা তিনি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ভারতীয় পণ্যের জন্য বাংলাদেশের বাজার উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন।
জিয়া ও এরশাদ ছিটমহল ও তিন বিঘা করিডোর সমস্যা সমাধানে কিছুই করেননি এবং খালেদা জিয়া নব্বইয়ের দশকে ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি উত্থাপন করতে ভুলে গিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির ব্যাপারে তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন, বরং খালেদা জিয়া তাতে রাজি হয়েছিলেন এবং এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ফলে ওই নির্বাচনে তার দল আওয়ামী লীগ বেশি শতাংশ ভোট পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় আমরা সরকার গঠন করতে পারিনি। তাহলে দেশ কে বিক্রি করল? খালেদা জিয়া, এইচএম এরশাদ ও জিয়াউর রহমানই এটা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ তা করছে না।’
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সব সংসদ সদস্যের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে এডিবিকে সহায়তার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর