টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় করা মামলায় মাওলানা সাদ অনুসারী সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ ২৩ জনকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থিত হয়ে আগাম জামিন চাইলে আদালত পুলিশ রিপোর্ট দেওয়া পর্যন্ত তাদের আগাম জামিন দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আদেশের পর এই আইনজীবী বলেন, ‘টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে নিহতের ঘটনায় সাদপন্থীদের প্রধান মুরব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ মামলার আসামিদের সবাই বয়োজ্যেষ্ঠ ও গণ্যমান্য ব্যক্তি। তাদের মধ্যে সাবেক সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এমন ব্যক্তিও রয়েছেন। আজ ২৩ জনকে পুলিশের প্রতিবেদন দেওয়া পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।’
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে সাদ অনুসারী ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের কয়েকশ’ জনকে আসামি করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী এস এম আলম নামে এক ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: ইসকনের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ কী, জানতে চান হাইকোর্ট
আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন- সাদ অনুসারীদের প্রধান মুরব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, তার ছেলে ওসামা ইসলাম আনু, আবদুল্লাহ মনসুর, কাজী এরতেজা হাসান, মোয়াজ বিন নূর, জিয়া বিন কাশেম, আজিমুদ্দিন, আনোয়ার আবদুল্লাহ, শফিউল্লাহ প্রমুখ। আসামিরা সবাই সাদ অনুসারীদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে তিন দিনের মূল ইজতেমা। এ উপলক্ষে মাঠ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইজতেমা মাঠে অবস্থান করছিলেন তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা। এর মধ্যেই আসামিরা বর্তমান সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশে অনুমতি ব্যতীত ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনের জোড় করতে চান। এ নিয়ে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উসকানি ছড়াচ্ছিলেন। মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের সই করা চিঠির মাধ্যমে সারা দেশের সাদ অনুসারীদের ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা মাঠেই জোড় পালনের ঘোষণা দেন। এ উপলক্ষে হাজারো সাদ অনুসারী মুসল্লি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ইজতেমা মাঠের চারপাশে জড়ো হন। ওয়াসিফুল ইসলামের হুকুমে সেদিন (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে হাজারো সাদ অনুসারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইজতেমা মাঠে ঘুমন্ত সাধারণ মুসল্লিদের (জোবায়েরপন্থী) ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তিনজন নিহত হন।
এ ঘটনায় ২০ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১টার দিকে ঢাকার খিলক্ষেতের একটি বাসা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মোয়াজ বিন নূরের বাসা উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে। ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় তার মায়ের বাসা রয়েছে। তিনি ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ ও নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার ৫ নম্বর আসামি।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত