ইতালির ভিসা প্রত্যাশীদের দ্রুত ভিসা ইস্যুর দাবি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা হলে নেতিবাচক পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, 'প্রচণ্ড চাপের মধ্যে যদি তারা হুমকি অনুভব করে, তাহলে আশঙ্কা থেকে যায় যে তারা বৈধভাবে লোকজনকে নেওয়ার জন্য যে ভিসা দিচ্ছে সেই কর্মসূচি থেকে আমাদের বাদ দিতে পারে।’
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ইতালির ভিসা প্রত্যাশীদের একটি প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করার পর সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মিছিল, সমাবেশ ও অফিস ঘেরাও করার মতো কর্মসূচির সম্ভাব্য প্রভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি প্রতিনিধি দলের সদস্যদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।
তিনি বলেন,‘তারা ভিসা দেবে কি দেবে না সেটা তাদের সার্বভৌম অধিকার। কেন ভিসা দেননি তা আমরা বলতে পারব না। এটা জিজ্ঞেস করাও যায় না।’
উপদেষ্টা বলেন, সরকার ভিসা প্রার্থীদের অবস্থা জানে এবং তারা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে সরকার কী করছে এবং প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে তারা কী করতে পারে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অগ্রগতি ধীর হওয়ায় প্রায় ২০ হাজার মামলা দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে এবং সরকার চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই মামলাগুলো নিষ্পত্তি করার তাগিদ দিচ্ছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ভিসাসহ দ্রুত পাসপোর্ট সরবরাহের দাবিতে ভিসা প্রত্যাশীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মধ্যে ঢাকার ইতালি দূতাবাস জানায়, আবেদনকারীদের জাল বা মিথ্যা নথি জমা দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।
ইতালি দূতাবাস জানায়, তারা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সক্রিয়ভাবে অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধ এবং বৈধ পথকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: ২০ অক্টোবরের মধ্যে সেন্টমার্টিন নিয়ে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
অভিবাসন ও গতিশীলতা ইস্যুতে সহযোগিতা আরও উন্নত করার জন্য একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে, যা শিগগিরই চূড়ান্ত হবে বলে তারা আশা করা হচ্ছে।
দূতাবাস প্রক্রিয়াজাত অ্যাপ্লিকেশনগুলোর আউটপুট বাড়ানোর প্রতিশ্রুতির আশ্বাস দিয়েছে এবং একটি নিবেদিত টাস্কফোর্স গঠনসহ রোমের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ লক্ষ্যে গৃহীত কিছু উদ্যোগ উপস্থাপন করেছে।
আবেদনকারীদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে একবার আবেদন জমা দেওয়ার পরে বা অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য অনুরোধ করার পরে তাদের 'নুলা ওস্টা'র মেয়াদ শেষ হবে না। নুলা ওস্টা হলো ইতালীয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষের জারি করা নথি যা কোনো নন-ইইউ নাগরিককে তাদের বসবাসের দেশে ইতালীয় দূতাবাস / কনস্যুলেটে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার অনুমতি দেয়।
বৈঠকে দূতাবাস ইতালিতে ওয়ার্কিং ভিসা প্রসেসিংয়ে বিদ্যমান বিলম্বের জন্য আইন ও প্রযুক্তিগত এবং লজিস্টিক ব্যাখ্যা দেন।
ভিসাপ্রার্থীরা বিষয়টি সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে তাদের দাবি তুলে ধরতে চেয়েছেন।
দুর্নীতি এবং মিথ্যা বা জাল নথি বা বিবৃতি উপস্থাপন করা ইতালি এবং বাংলাদেশি উভয় আইনে গুরুতর অপরাধ, যাতে ইতালিয়ান দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার অবস্থান জানে না সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা