একটি ভালো নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন শুধু সরকারের অর্জন বললে ভুল হবে, এটি বেসরকারি খাত ও জনগণের জাতীয় অর্জন। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছানোর আবেদন করলেও আমাদের প্রস্তুতি অব্যাহত রাখতে হবে।
অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিনিয়োগ চাঙ্গা করতে হলে একটি ভালো নির্বাচন দরকার। বিনিয়োগকারীরা একটি স্থিতিশীল সরকারের নিশ্চয়তা চায়। তাই সরকার ঘোষিত কাঙ্ক্ষিত সময়ে একটি ভালো নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে পোশাক খাতে বড় কারখানাগুলোর তেমন অসুবিধা না হলেও ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মোস্তাফিজুর আরও বলেন, ওষুধ শিল্পে প্যাটেন্ট সুবিধা থাকবে না বিধায় ওষুধের দাম দশ থেকে ত্রিশ গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ওষুধ শিল্পে মূল্য বৃদ্ধির ঝুঁকি মোকাবিলায় ঢাকার মুন্সিগঞ্জে এপিআই পার্কের কার্যক্রম ২০১২ সালে শুরু হলেও ২০২৫ সাল পর্যন্ত শুধুমাত্র মাটি ফেলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এর জন্য আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। বিগত সরকারের তথ্য বিভ্রাটে ব্যাংক সমূহে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা দেখানো হলেও প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৫ লাখ কোটি টাকা। তাই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, সিঙ্গেল উইন্ডো, পোর্টে কম সময় ও লিড টাইম কমিয়ে আনার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা শীর্ষক ছায়া সংসদে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই সময়ে এলডিসি থেকে উত্তরণ পেছানো— না পেছানো নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণ থেকে ফিরে আসার প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে নিয়ে হাসাহাসি হতে পারে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আফগানিস্তানের মতো অযোগ্য দেশ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বাংলাদেশ।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা রয়েছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রাইম ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বিতার্কিকরা।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, প্রফেশনাল একাউন্টেন্ট আবুল বশির খান, অধ্যাপক আল—আমিন ও সাংবাদিক তৌহিদুল ইসলাম।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।