স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের পরও বাংলাদেশি পণ্যের জন্য ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি সুবিধা চালু রাখবে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং।
মঙ্গলবার (২১ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ সফররত অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. হাছান মাহমুদ।
বৈঠকে আরও ছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী ও ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদিয়া সিম্পসন।
গত ২৬ বছরে এটিই প্রথম কোনো অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান।
এ সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দেওয়া ও ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী গো হুইটল্যামকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের জন্য অস্ট্রেলিয়া সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করায় পেনি ওংকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ জানান, আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, বাংলাদেশের ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৪০টি আইটি ভিলেজে অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগ, অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশিদের মৌসুমি কর্মসংস্থান, সেখানে প্রবাসীদের কল্যাণ, অবৈধ অভিবাসন রোধ, জ্বালানি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার টেকনিক্যাল অ্যান্ড ফারদার এডুকেশনের (টিএএফই) আওতায় বাংলাদেশের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে (টিটিসি) উন্নত প্রশিক্ষণ সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী হাছান।
তিনি আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ইউটিসির সঙ্গে চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের যেমন ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা রয়েছে তেমনিভাবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যও এই সুবিধা চালু করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘গত চার বছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়ে চার বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আমরা আগামী পাঁচ বছরে দ্বিগুণ হবে বলে আশা করি।’
সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং জানান, সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে ব্যাপক উন্নতি করেছে, তা আরও এগিয়ে নিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেরিটাইম সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য তার দেশের কোস্টগার্ড প্রধান বাংলাদেশ সফর করবেন। ভারত মহাসাগরীয় দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।