করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সরকারের অনুমতিতে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে সড়কগুলোতে চলতে শুরু করেছে গণপরিবহন। বৃহস্পতিবার থেকে আন্তঃজেলা ব্যতীত সকল বাস সেবা চালু হয়েছে।
ঈদ ও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আন্তঃজেলার বাস, ট্রেন এবং লঞ্চ সেবা বন্ধ রেখেছে সরকার।
সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনাল যেমন, মিরপুর রোড, রোকেয়া স্মরণী, উত্তরা, বনানী এবং মহাখালী থেকে বাসগুলো ছেড়ে যেতে দেখা যায়।
সড়কে গণপরিবহনের উপস্থিতির কারণে অন্যদিনের মতো রাস্তায় প্রাইভেট গাড়ি এবং পিকআপ ভ্যানের সংখ্যা কম চোখে পড়ে। গণপরিবহনগুলোতে যাত্রীদের মাস্ক পরে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলাচল করতে দেখা যায়। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ে।
রাজধানীর একজন ট্রাফিক পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু সকাল থেকেই রাস্তায় গণপরিবহন চলা শুরু করেছে, তাই আমরাও সকল বাসগুলোতে চেক করে স্বাস্থ্যবিধি পালনের বিষয়গুলো নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।’
ইউএনবির কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকেই জেলার শাসনগাছা, জঙ্গলিয়া, চকবাজার বাস টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। একটু পরপরই ছেড়ে যাচ্ছে বাস।
কোনো যাত্রীকেই বাসে মাস্ক ছাড়া ভ্রমণ করতে দেয়া হচ্ছে না। মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে পরিবহন শ্রমিকদের বেশ সচেতন হতে দেখা গেছে।
গত ৫ এপ্রিল লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ করা হলেও, দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৭ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন চালু করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ১৪ এপ্রিলে লকডাউনের সময় থেকে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সকল প্রকার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার।
বাস ভাড়া বৃদ্ধি
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ৩০ মার্চ জানান, সরকার গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে, যা ৩১ মার্চ থেকে কার্যকর হয়।
এর আগেও গত বছরে ৩১ মে সরকার আন্তঃজেলা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরসহ আশপাশের এলাকার বাস ভাড়া বৃদ্ধি করে। গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ কম যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে, ভাড়া বৃদ্ধি করে সরকার।
বর্ধিত লকডাউন
করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মেয়াদ ৫ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে এবং ছয় দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
বুধবার (৫ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই প্রজ্ঞাপন জারি করে।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সকল সরকারি আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে ঈদের ছুটিতে নিজস্ব কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করতে হবে। এছাড়া দোকানপাট-বিপণীবিতান সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে না মানা হলে, তাৎক্ষণিকভাবে দোকানপাট-বিপণীবিতান বন্ধ করে দেয়া হবে।
আন্তঃজেলার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। ৬ মে থেকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। কিন্ত, ট্রেন, লঞ্চ চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে।
সরকাল প্রথমে গত ৫ এপ্রিল দেশে সীমিত লকডাউন ঘোষণা করে। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের মেয়াদ কয়েক দফা বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে ২৫ এপ্রিল থেকে দোকন ও বিপণীবিতান মালিক সমিতির দাবি মেনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের শর্তে দোকান ও বিপণীবিতান খোলার অনুমতি দেয় সরকার।