বাংলাদেশ কৃষিখাতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও পণ্যের বহুমুখীকরণে ডাচ উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত অ্যানে ভেন লিওভেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার অত্যন্ত বৃহৎ ও সম্ভাবনাময়। স্থানীয় জনগণের চাহিদা মেটাতে বিশেষ করে কৃষিখাতের আধুনিকায়ন খুবই জরুরি। সারা পৃথিবীতে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নেদারল্যান্ডসের অবস্থান দ্বিতীয়। তাই বাংলাদেশ কৃষিখাতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও পণ্যের বহুমুখীকরণে ডাচ উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিতে পারে।
আরও পড়ুন: কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগের আহবান কৃষিমন্ত্রীর
বুধবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর অফিসে ডিসিসিআই’র সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে রাষ্ট্রদূত এই আহ্বান করেন। এসময় উভয়েই দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যক্রম বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১.২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৩৮ মিলিয়ন এবং ১.০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ মূলত তৈরি পোশাক, হিমায়িত মাছ এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য নেদারল্যান্ডসে রপ্তানি করে এবং বাংলাদেশে থেকে আরও বেশি হারে তৈরি পোশাক ও পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত প্রভৃতি পণ্য বেশি হারে আমদানির আহ্বান জানান। এছাড়াও বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, নদী ব্যবস্থাপনা ও নদী শাসন, ডিজিটাল শিল্পখাত এবং সমুদ্র অর্থনীতি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করে, এখাতগুলোতে বিনিয়াগের জন্য নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি।
আরও পড়ুন: মেধা বিকাশে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে হুয়াওয়ে
বাংলাদেশের সমুদ্র অর্থনীতি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে উল্লেখ করে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, এ খাতের সুফল ভোগ করতে নেদারল্যান্ডস এর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
রিজওয়ান রাহমান আরও বলেন, ডিসিসিআই এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্মেলন’ আয়োজন করবে এবং এ সম্মেলনের বিটুবি সেশনগুলোতে ডাচ বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত অ্যানে ভেন লিওভেন বলেন, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বেশ সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে, তবে সেটাকে আরও উন্নীত করতে হলে দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যকার যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং বাংলাদেশ সরকার গৃহীত‘ডেল্টা প্ল্যান’-এর কার্যকর বাস্তবায়নে ভবিষ্যতে বৃহৎ বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: ফিনল্যান্ডকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
এছাড়াও বিশেষ করে বাংলাদেশে নদীপথের টেকসই উন্নয়ন, নদীশাসন, নদীখনন ও সর্বোপরি জলজ অবকাঠামো নির্মাণে ডাচ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএস, এফসিএ এবং সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।