গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো লোডশেডিংয়ে ধুঁকছে দেশ।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার দাপ্তরিক তথ্যে দেখা যায়, সোমবার গ্যাস সরবরাহ ২ হাজার ৩৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে মঙ্গলবার ২১০ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়ে ২ হাজার ৫৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট হয়েছে।
এতে আরও দেখা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে এখনো প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের বিশাল ঘাটতি রয়ে গেছে, যার ফলে বেশ কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।
সরকারি সূত্র জানায়, শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রটি ১২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। কিন্তু পূর্ণ সক্ষমতায় ফিরলেও মাত্র ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করে।
আরও পড়ুন: তীব্র পানি-গ্যাস সংকটে রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা
শেভরনের এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা এখন ১২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম। কিন্তু সরকার বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে পুরো সরবরাহ পাচ্ছে না। সেকারণেই ক্ষেত্রটি ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে।’
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারাও বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে পুরো সরবরাহ পাচ্ছেন না বলে স্বীকার করে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বলেছে তাদের আর গ্যাসের প্রয়োজন নেই।
কর্মকর্তারা জানান, দেশের সর্ববৃহৎ গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানা গত ৩ এপ্রিল তিন দিনের রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় যায় এবং যথাসময়ে উৎপাদনে ফিরে আসে।
তারা বলেন, মহেশখালীর দুটি এলএনজি টার্মিনালের ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট সক্ষমতার বিপরীতে ৯৭২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে আমদানি করা এলএনজির সরবরাহও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে ৩ কার্গো এলএনজি আমদানি করবে সরকার
এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্যে দেখা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে সরবরাহ পর্যন্ত ঘাটতি থাকায় দেশে ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে।
তথ্য বলছে, এদিন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৩ হাজার মেগাওয়াট এবং সন্ধ্যায় বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৫ হাজার মেগাওয়াট।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দিনের সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয়েছে ৫০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কারণ এসময় দেশে ১২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছিল ১২ হাজার ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন যে তাপপ্রবাহ অপরিবর্তিত থাকলে সন্ধ্যার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন: বিবিয়ানা রক্ষণাবেক্ষণের কারণে গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে