জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাবেক কাস্টম কর্মকর্তা আব্দুল বারিক ও তার স্ত্রী ফেরদৌস ইয়াসমিন খানমের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মঙ্গলবার (২১ মে) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ এর উপসহকারী পরিচালক সবুজ হোসেন এ দম্পতির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন।
এরমধ্যে একটিতে শুধু সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা আব্দুল বারিক ও অপরটিতে তাকে ও তার স্ত্রীকে আসামি করা হয়েছে।
আব্দুল বারিকের বিরুদ্ধে করা মামলার এজহারে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর আব্দুল বারিক সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে তিনি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন।
যাচাই করে দেখা যায়, তিনি ৩ লাখ ৮ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদই অর্জন করেছেন। এছাড়া দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪২ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। কিন্তু যাচাই করে দেখা যায়, তিনি ১ কোটি ৬৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬০০ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক। এক্ষেত্রে আব্দুল বারিক ১ কোটি ২৩ লাখ ১৪ হাজার ৯২২ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য জেনে বুঝে সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন।
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আব্দুল বারিকের মোট ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩৯ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। আর্থিক দায় বা ঋণ রয়েছে ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৩২৮ টাকা। সেই হিসাবে তার নীট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার ২৭২ টাকা। পারিবারিক ব্যয় ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট ২ কোটি ৬৫ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ টাকার সম্পদ রয়েছে। এরমধ্যে তার গ্রহণযোগ্য আয় ১ কোটি ৯৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮২২ টাকা। এক্ষেত্রে তার সম্পদের চেয়ে আয়ের উৎস ৭০ লাখ ৬২ হাজার ১৫৬ টাকা কম। অতএব তিনি ৭০ লাখ ৬২ হাজার ১৫৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন।
এ বিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর উপসহকারী পরিচালক সবুজ হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল বারিক ও তার স্ত্রীকে সম্পদ বিবরণীর চেয়ে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে নোটিশ দেয় দুদক। জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণী যাচাই-বাছাইয়ের পর জানা গেছে, ফেরদৌস ইয়াসমিন খানম ১ কোটি ৯২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক। অপরদিকে, আবদুল বারিক ১ কোটি ২৩ লাখ ১৪ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন।
জানা গেছে, আবদুল বারিক চট্টগ্রাম কাস্টমসে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে ১৯৯০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পান। ২০১০ সালে তিনি রাজস্ব কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি লাভ করেন। আর অবসর নেন ২০১৪ সালে। কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি নামে বেনামে নিজের ও স্ত্রী ফেরদৌস ইয়াসমিনের নামে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে গড়েন অঢেল সম্পদ।