চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আলাওল হলের দীর্ঘ দিনের বিভিন্ন সংকট নিরসনের দাবিতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ব্যানারে বিক্ষোভ করে ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশ।
বৃহস্পতিবার রাতে দুইঘন্টা ধরে চলে তাদের বিক্ষোভ। এ সময় টায়ার জ্বালিয়ে পাশের সড়কটিতেও যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে প্রক্টরের আশ্বাসে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। বিক্ষোভ চলাকালে তারা প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন।
সেগুলো হলো হলের পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার করা, গোসলের জন্য নির্মিত হাউস (ছোট সুইমিংপুল) নিয়মিত পরিষ্কার রাখা, ইন্টারনেটের সেবা নিশ্চিত করা, খেলাধুলার সরঞ্জাম নিশ্চিত করা, হলের চারপাশ পরিষ্কার রাখা, চলমান সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করা, হলের কর্মচারীদের কাজের তদারক করা এবং কর্মচারীদের গাফিলতির জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধে চবির মূল ফটকে তালা
তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে কর্মসূচি পালন করা হলেও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর তিন অনুসারীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করার জেরে এই বিক্ষোভ হয়েছে বলে দাবি হলের প্রাধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষকের।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের একটি দল সন্ধ্যা ৭টা থেকে বালতি, মগ ও বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে হলের ফটকের সামনে অবস্থান করে। আবার কিছু শিক্ষার্থী ফটকের বাইরের সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় ‘প্রভোস্টের (প্রাধ্যক্ষ) পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, হলের সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি।
তবে আলাওল হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফরিদুল আলম বলেন, সমস্যা-সংকটের কথা বলা হলেও মূলত কয়েকজন শিক্ষার্থীর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার না করায় আন্দোলন করা হচ্ছে। বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা এক সহকারী প্রক্টরকে মারধর করার চেষ্টা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির কারণে চবিতে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াছের নেতৃত্বাধীন বিজয় উপপক্ষের ১২ নেতা-কর্মীকে সংঘর্ষ, কক্ষ ভাঙচুর এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সহকারী প্রক্টরের দিকে তেড়ে আসার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়।
এ ব্যাপারে চবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে তিনিও বিক্ষোভে ছিলেন। এর সঙ্গে বহিষ্কারের কোনো সম্পর্ক নেই।
রাতে প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, দুইঘন্টা ধরে কিছু শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার পর উপাচার্যকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে জানানো হয়েছে। শিগগিরই সব সমস্যার সমাধানের আশ্বাসের পর এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
আরও পড়ুন: কমিটির দাবিতে চবি ফটকে ছাত্রলীগের অবরোধ