চলতি মাসে চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে। টেকসই ও যুগোপযোগী করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ২০৫০ সাল পর্যন্ত সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চয়তা দিতে এ পরিকল্পনার গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের মেয়াদেই এ পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে।
বুধবার (২১ মে) বিকালে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দেশের কৃষিকে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি নির্ভর করতে সরকার কাজ করছে। এ লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল প্রতিষ্ঠানের সেবাগুলো একটি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের(এম আই এস) আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রতিটি ভূমি মৌজাকে ডাটাবেজের আওতায় এনে সার, বীজ, বালাইনাশক, সেচ, ফসল বৈচিত্র্য, আবহাওয়া, রোগবালাই কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য সন্নিবেশিত একটি মোবাইল অ্যাপস 'খামারী' চালু করা হচ্ছে। এই অ্যাপসের মাধ্যমে কৃষক তার জমিতে কোন মৌসুমে কী ফসল চাষ করতে হবে—তার পরিচর্যা থেকে শুরু করে ফসল উঠানো পর্যন্ত সকল তথ্য ও সেবা পাবে।
দেশের শিক্ষিত নারী ও তরুণদের কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করবে। কৃষি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা বাড়াতে সরকার সচেষ্ট বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: আম রপ্তানি বাড়াতে এফএও’র সহায়তা চান খাদ্যমন্ত্রী
সচিব জানান, চলতি বছরে দেশে ফসলের উৎপাদন ভালো হয়েছে। ধান ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন সন্তোষজনক। পঁচনশীল শাক-সব্জি, আলু ও পেঁয়াজ সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার ও সংরক্ষণাগার তৈরি করা হচ্ছে।
গত বছর আগস্টে আকস্মিক বন্যায় দেশের ২৩টি জেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বিশেষ প্রণোদনা ও তদারকির মাধ্যমে সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের সহযোগিতা করা হয়েছে।
সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ও নেতৃত্বের কারণ সার ক্রয়ের বিশাল অঙ্কের বকেয়া পরিশোধ করে দেশে সারের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। দেশে বর্তমানে কোনো সার সংকট নেই।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক চীন সফরের পর বাংলাদেশ থেকে চীনে কৃষি পণ্য বিশেষ করে আম রপ্তানির বিষয়ে সরকার জোড়ালোভাবে কাজ শুরু করে। চলতি মাসেই দেশ থেকে আমের চালান চীনে যাবে। দেশে আম উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ২৭ লাখ টন। বর্তমানে কয়েকটি দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। আমের নতুন নতুন বাজার অনুসন্ধান ও রপ্তানির লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
আমের পাশাপাশি কাঁঠাল ও অন্যান্য ফল রপ্তানির জন্য সরকার কাজ করছে।
চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রণোদনার মাধ্যমে আম চাষে কৃষকদের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ মাহমুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।