জুম্মাতুল বিদা’র জেলার সবচেয়ে বড় জুম্মার নামাজের জামাত শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো হাজীগঞ্জের ঐতিহাসিক বড় মসজিদে।
এটিকে ঐতিহাসিক বলা হয়, কারণ এখানে একসময় বঙ্গবন্ধু, শেরে বাংলাসহ আরও অনেক বড় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বুজুর্গগণ ও ব্যক্তিরা নামায আদায় করেছেন।
শুক্রবার ধর্মীয় ভাবগম্ভিযের্র সঙ্গে একসঙ্গে লাখ লাখ মুসল্লী জুম’আতুল বিদা’র এ নামাজ আদায় করে অশ্রুসিক্ত নয়নে।
মুসল্লিগণ প্রখর রোদ ও প্রচণ্ড তাপমাত্রা উপেক্ষা করে এ নামাজ আদায় করেন।
সকাল থেকেই আশ-পাশের উপজেলা এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লীগণ এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসতে দেখা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১১ টার মধ্যেই বিশালএ মসজিদের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে মসজিদ কর্তৃপক্ষ মসজিদের মাঠ,পাশের আহমাদিয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ও ভবন, জামেয়া আহমাদীয়া কওমী মাদ্রাসা ভবন, হাজীগঞ্জ টাওয়ার, রজনীগন্ধ্যা মার্কেট, হাজীগঞ্জ প্লাজা, বিজনেস পার্ক, প্রাইম ব্যাংক ভবন, সাবেক পৌরসভার ওপরে বিশাল জামায়াতের আয়োজন করা হয়।
এ সব ভবন সাড়ে ১১-১২ টার মধ্যেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অংশগ্রহণে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
জুময়ার নামাজের আযানের পর বয়ান করেন ইমাম ও খতিব মুফতি আবদুর রউফ।
এরইমধ্যে, দুপর ১ টায় কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক, স্টেশন রোডের সম্মুখ থেকে শুরু করে হাজীগঞ্জের পূর্ব বাজারের বড় ব্রীজ পর্যন্ত মুসল্লীদের নামাজের কাতার ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
প্রখর রোদ উপেক্ষা করে মুসুল্লীগণ, মাঠ ও মহাসড়কে নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং বৈশ্বিক মহামারি , যুদ্ধ -সংঘাতমুক্ত পৃথিবী ও মুসলিম উম্মার ও দেশের উন্নয়নও অগ্রগতির জন্য বিশেষ মোনাজাত করেন মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব আলহাজ মুফতি আব্দুর রউফ।
মোনাজাতের সময় আমিন আমিন ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মূখরিত হয়ে উঠে।
এ সময় আল্লাহর দরবারে পানাহ চেয়ে জুম’আতুল বিদা’র মোনাজাতে মুসল্লিদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠে।
হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের বৃহৎ এ জামায়াতে হাজীগঞ্জ থানা প্রশাসন, পৌর পরিষদ, হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এলাকাবাসী সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসে। বিশেষত, হাজীগঞ্জ বাজার হকার ও যানজট মুক্ত রাখা, বাজার পরিষ্কার রাখা, দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের জন্য অস্থায়ীভাবে অযুর ব্যবস্থা করে দেয়া ইত্যাদি ছিল উল্লেখযোগ্য।
জুম’আতুল বিদা’র জামায়াতের প্রস্তুতি ও জুম’আতুল বিদা’র জামায়াত প্রসঙ্গে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মোতাওয়াল্লী (ভারপ্রাপ্ত) প্রিন্স শাকিল আহমেদ ইউএনবি কে বলেন,‘ প্রখর রোদ উপেক্ষা করে বিশাল জামায়াতে লাখো মুসুল্লি নামাজ আদায় করেছে। অন্যান্য বছরের চেয়েও এবার জুম’আতুল বিদা’র নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত মুসল্লিদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে নামাজ আদায়ে আমাদেরকে হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ বাহিনী,বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় সংস্থাসমূহ পর্যাপ্ত সহযোগিতা প্রদান করেছে।