খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন সড়কে শ্রমিক সংগঠনের নাম করে চাঁদাবাজির অভিযোগে গুইমারা উপজেলা শ্রমিক দলের দুইজন সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ২০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি সিন্দুকছড়ি জোনের সেনা সদস্যরা এ অভিযান চালান।
নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, গাড়ি চালকদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া বাজার এলাকায় ক্যাপ্টেন শাইয়েন কাদিরের নেতৃত্বে একটি টহল দল অভিযান চালায়। এসময়, নগদ টাকা ও চাঁদা আদায়ের রশিদ বইসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন—গুইমারা উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য খলিলুর রহমান (৪৭) ও আবু সায়েদ (৪৫)। তারা উভয়ই গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি এলাকার বাসিন্দা।
নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র জানায়, আটকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ চাঁদা আদায়ের রশিদ বই জব্দ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গুইমারা উপজেলার অন্তত পাঁচটি স্থানে বিভিন্ন সমিতি ও সংগঠনের নামে নিয়মিতভাবে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। স্থানগুলো হলো—জালিয়াপাড়া কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে, কাসেম হোটেলের পাশে, জালিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে, গুইমারা বাজারে কাজী টাওয়ারের সামনে ও হাতিমুড়া পুলিশ বক্সের সামনে।
অভিযোগ রয়েছে, দিনে ও রাতে কাঠ, বাঁশ, ইট, বালু ও বিভিন্ন মালবাহী ট্রাক থেকে বিভিন্ন সমিতির নামে বাধ্য করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদার অঙ্ক ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। চাঁদা না দিলে চালককে হেনস্তা করার পাশাপাশি তার গাড়ি আটকে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় এক ট্রাকচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিদিন রাস্তায় চাঁদা দিতে হয়। না দিলে গাড়ি আটকে রাখে। এই নিয়ে আমরা অনেক ভুগছি। বিষয়টি প্রশাসনকেও জানিয়েছি।
আরও পড়ুন: পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় খুলনা ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার
তিনি আরও অভিযোগ করেন, খাগড়াছড়ি থেকে একটি মালবাহী ছোট পিকআপ বারইয়ার হাট এলাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রতিটি গাড়িকে অন্তত আট হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। জেলা সদর থেকে শুরু করে, একইভাবে মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, রামগড়, হেয়াকো, সর্বশেষ বারইয়ার হাটে গিয়েও চাঁদা দিতে হয়।
অভিযানের পেট্রোল কমান্ডার ক্যাপ্টেন শাইয়েন কাদির বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে দুই চাঁদাবাজকে চাঁদা উত্তোলনের সময় আটক করা হয়েছে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর এই অভিযান চলমান থাকবে। আটক দুই ব্যক্তিকে গুইমারা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী অভিযান চলমান থাকবে।