চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে রয়েল এক্সপ্রেস নামের বাসকে ওভারটেক করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পূর্বাশা পরিবহনের একটি বাস উল্টে খাদে পড়ে বাসের সুপারভাইজার নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন।
সোমবার রাত ১২টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের বোড়াই গ্রামের রাতুল মার্কেটের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। এসময় ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলার পুলিশ উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। ঘটনার পরপরই পালিয়ে যান বাসের চালক ও হেলপার।
নিহত সুপারভাইজার সাগর আলী(২৫) চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ইসলাম বাজারপাড়ার বাবু হোসেনের ছেলে।
এ ছাড়া আটকে পড়া বাস যাত্রীদের উদ্ধার করার সময় আহত হন হোসেন আলী নামের একজন ফায়ারফাইটার।
জানা যায়, গতকাল রাত ১১টা ১৫ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার থেকে পূর্বাশা পরিবহনের ঢাকা মেট্রো—ব—১৫—৫২৪২ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের এসি বাসটি ১৮ থেকে ২০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। বাসটি ঝিনাইদহ সাধুহাটি ইউনিয়নের বোড়াই এলাকায় পৌঁছালে রয়েল এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি বাসকে ওভারটেক করার চেষ্টা করে। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের খাদে উল্টে যায়। এতে বাসের অন্তত ১৫ জন যাত্রী আহত হয়। দুর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাসের সুপারভাইজার সাগরের।
তবে বাসের চালক ও হেলপারের কোনো খোঁ পাওয়া যায়নি। পরে চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বাসের ৯ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। আহত আরও কয়েকজন যাত্রী স্থানীয়দের সহযোগিতায় চিকিৎসা নেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য নিহত
স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে মহাসড়কের পাশেই এক ব্যক্তির পুকুর ভরাটের কাজ চলছিল। ট্রাক্টরে করে মাটি বহনের সময় রাস্তার ওপর ও চারপাশে মাটি ও কাদা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। রাস্তার ওপরে থাকা কাদার কারণে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যতর চিকিৎসক আব্দুল কাদের বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বাস দুর্ঘটনায় আহত ৬ জনতে জরুরি বিভাগে নেয়। আহতদের মধ্যে একজনকে ভর্তি রাখা হয়, অন্য পাঁচজনের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর একই দুর্ঘটনায় আরও দুজন এবং উদ্ধার কাজে নিয়োজিত একজন ফায়ারফাইটার আহত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আসে।’
চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, বাসটিতে ১৮ থেকে ২০ জন যাত্রী ছিলো। বাসের চালক ও হেলপারের খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাসের সুপারভাইজার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আমরা প্রথমে আহত ৬জন যাত্রীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। বাসের মোট যাত্রীদের মধ্যে ১২ জন আহত হন। রাত পৌনে দুইটা পর্যন্ত আমরা উদ্ধার কাজ চালিয়েছি।’
নিহত সুপারভাইজারের লাশটি সদর থানা পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা নিহত