কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে ‘নিরাপত্তা ও জিজ্ঞাসাবাদের’ জন্য যারা ডিবি হেফাজতে আছেন, তাদের শিগগিরই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন-অর-রশীদ।
এছাড়াও আন্দোলন বন্ধে ছয় সমন্বয়ককে 'বিবৃতি দিতে বাধ্য করা' হয়েছে এমন দাবিকে 'ভিত্তিহীন ও গুজব' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘এসব গুজব ও ভিত্তিহীন। যারা এগুলো ছড়াচ্ছে তাদের থামতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুর পৌনে ২টার দিকে ডিবি কার্যালয়ের প্রধান ফটকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘ডিবি আস্থার জায়গা। এখানে কাউকে বিনা কারণে আটক করা হয় না, চাপের মুখে জবানবন্দি আদায় করা হয় না। শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে স্বীকার করেছে যে সরকার তাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। এ কারণে আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রতি তার সহানুভূতি রয়েছে বলে প্রকাশ করেন ডিবিপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে এই ছয় সমন্বয়ককে এনেছি। এ নিয়ে নানা গুজব ছড়ালেও আমরা তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। তাদের ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি।’
হারুন বলেন, সমন্বয়কদের পরিবারের সদস্যরা ডিবি কার্যালয়ে এসে দেখে গেছেন তারা নিরাপদে আছে ও তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যদি অনিরাপদ বোধ করে আমাদের সহায়তা চায় তাহলে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের কর্তব্য। আমরা সেটাই করছি।’
সমন্বয়কদের স্বেচ্ছায় 'কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার' বিবৃতির বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন ডিবিপ্রধান।
তিনি বলেন, 'গত রাত থেকে আমরা গুজব দেখতে পাচ্ছি যে তারা স্বেচ্ছায় এই বিবৃতি দেয়নি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ডিবি অফিস একটি আস্থার জায়গা, যেখানে কারো সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা অন্যায়ভাবে আটক করা হয় না। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে নিরাপত্তার কারণে যারা আমাদের কাছে আসে বা যাদের নিয়ে আসি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
সমন্বয়কের ডিবি হেফাজতে কতদিন থাকবে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, 'আমরা তাদের ও তাদের পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। শিগগিরই তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’
এসময়শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহিংসতার অনুপ্রবেশের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন নিরীহ শিক্ষার্থীরা শুরু করেছিল কিন্তু ধ্বংসাত্মক উদ্দেশ্য নিয়ে জামায়াত-বিএনপিসহ একটি চক্র সে আন্দোলনে দখল দেয়। তারা একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করে, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে অগ্নিসংযোগসহ সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড চালায়। আমরা বিশ্বাস করি যে এই ষড়যন্ত্রকারীরা যদি আবার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করে তাহলে সমন্বয়কদের নিরাপত্তার বিষয়টি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এ কারণে আমাদের অবশ্যই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’