প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীজনদের সঙ্গে তাদের বৈশ্বিক কর্মসূচিতে সমন্বয় সাধনের জন্য বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (বিসিডিপি) তৈরি করা হয়েছে।
বিসিডিপি জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা মোকাবিলায় অংশীজন, উন্নত দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং তহবিল কর্মসূচির সঙ্গে কাজ করবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসিসি) নির্বাহী সচিব সাইমন স্টিল সোমবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি শুরু করছে।
এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনাসহ (ন্যাপ) বাংলাদেশের বিভিন্ন অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই নানা ধরনের ঘূর্ণিঝড়, ভারী বৃষ্টিপাত ও তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমরা বনায়নের জন্য সামাজিক আন্দোলনকে উৎসাহিত করছি, ৮৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করেছি এবং বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করছি।’
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের গবেষকরা লবণাক্ততা, বন্যা ও খরা সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।
আগামী জুন থেকে বর্ষা মৌসুমে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার দল আওয়ামী লীগ এই আন্দোলনের অগ্রদূত।
নিজ উদ্যোগে জলবায়ু তহবিল গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন সাইমন স্টিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করে না, বরং অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো নিঃসন্দেহে সারা বিশ্বের জন্য উদাহরণ।
সাইমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালনকারী নেতা এবং তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে অংশ নিয়েছেন যেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে আপনারা এসব ফোরামে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় আপনাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন।‘
অন্যান্য দেশগুলো বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞতাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব অভিযোজন ও প্রশমন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সাইমন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশ শুধু নিজের দেশে নয়, সারা বিশ্বে তার পদচিহ্ন রেখে যাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ।