জাতিসংঘের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংস্থা অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রার্থী হিসেবে ১৮৯ ভোটের মধ্যে ১৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ।
শনিবার (৭ জুন) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাকক্ষে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা ও উজবেকিস্তান এ নির্বাচনে জয় পেয়েছে।
ইকোসক জাতিসংঘের মূল ৬টি অঙ্গসংস্থার একটি। বহুপক্ষীয় ও উন্নয়ন কূটনীতি প্রশ্নে জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত অঙ্গসংস্থাটি।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির চেয়ার নির্বাচিত রাষ্ট্রদূত মুহিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডা ও ‘ভিশন-২০৪১: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ বাস্তবায়নে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে চলেছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশের উন্নয়ন বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
নির্বাচনস্থলে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বাংলাদেশের বিজয়কে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন সফলতার বৈশ্বিক স্বীকৃতির অংশ এ বিজয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাধারণ বিবেচনায় বাংলাদেশের অব্যাহত বৈশ্বিক নির্বাচনে সাফল্য এবং বিশেষ করে অত্যন্ত সম্মানজনক এ নির্বাচনের সাফল্য বাংলাদেশ যে অন্যান্য দেশের বিশ্বাস, নির্ভরতা ও সম্মান অর্জন করেছে তারই স্বীকৃতি।
এর আগে, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত জাতিসংঘের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির (দ্বিতীয় কমিটি) সভাপতি নির্বাচিত হন।
জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিসের সভাপতিত্বে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দুর্যোগ মোকাবিলায় তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
নির্বাচনে বিজয়বার্তায় মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, ‘এ বিজয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও সৃষ্টিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়নের স্বীকৃতি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ।’
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, ‘ইকোসকের সদস্যপদ আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে অবাধ ও টেকসই উত্তোরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
ইকোসকের সদস্যপদ জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরাম, কমিশন, কমিটি, নির্বাহী বোর্ড, ইউএন-এসকাপের মতো আঞ্চলিক প্লাটফর্মে সহায়ক নীতি প্রণয়নসহ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়নের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে। এ বিজয় আমাদের উন্নয়ন অভিজ্ঞতার সাফল্যকে বিশ্বের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে সহায়ক হবে বলে রাষ্ট্রদূত মুহিত উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বর্তমানে ইউএনডিপি/ইউএনএফপিএ/ইউএনঅপ্সের নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
ইকোসকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তিন বছর মেয়াদে (২০২৫-২০২৭) দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ।