জাতি শুক্রবার ৫২তম বিজয় দিবস-২০২২ ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করছে। সবচেয়ে আনন্দের দিন যখন ত্রিশ লাখ শহীদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এবং প্রায় তিন লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে দেশটি জন্মগ্রহণ করেছিল।
১৯৭১ সালের এই গৌরবময় দিনে নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাষ্ট্রপ্রধান জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং এর পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় স্যালুট পেশ করে।
দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা সকালে নগরীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পৃথক দু’টি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবারের সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সর্বস্তরের মানুষ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে আজ নানা কর্মসূচি পালিত হবে।
দিবসটি পালনে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দেশ-বিদেশে বাংলাদেশিরা দিনটি উদযাপন করবে।
৩১ বন্দুকের স্যালুটের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়।
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ক্ষমতায়ন এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে।
সারাদেশে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
এদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’ ও জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ও পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে একই ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
দিনটি সরকারি ছুটির দিন। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিওগুলো মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য তুলে ধরে মাসব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
নগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হবে।
রাজধানীর শিশু পার্কে নিঃস্ব শিশুদের বিনামূল্যে যেতে দেয়া হবে। সারা দেশে জেল, হাসপাতাল, এতিমখানায় উন্নত খাবার পরিবেশন করা হবে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।