জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের অন্যতম সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ। এর ফলে নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বাড়বে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পাঁচ দশক ধরে এ ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করা এই স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা নাগরিক সমাজের যে মতবিনিময় করেছি সেখানে সবার অভিমত হচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে হওয়া উচিত। কারণ স্থানীয় নির্বাচন করার কারণে আমাদের কমিশনের সক্ষমতা বাড়বে। পরীক্ষা হয়ে যাবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে যে সাপোর্ট দরকার হবে তা নিশ্চিত হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন: জনগণের আস্থা ধরে রাখতে দায়িত্বশীল আচরণ করুন: বিএনপি নেতাদের তারেক
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনের আগে যদি জাতীয় নির্বাচনে যাই, তাহলে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে তা ঝুলে যাবে। কারণ এখন আমাদের যে চিন্তা-ভাবনা, স্থানীয় নির্বাচন যেটা আছে সেটা কোনো সিস্টেম না। আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান, আলাদা আলাদা আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। কোনো কমপ্রিহেন্সিভ সিস্টেম নাই। এই সংস্কারের বড় কাজ হবে একটা সিস্টেম ডেভেলপ করে দেওয়া।’
‘এই সিস্টেম করার জন্য এখন মোক্ষম সময়। কেননা, বেশিরভাগ স্থানীয় সরকার কিন্তু নেই। কেবল ইউপি আছে। কাজেই ছবি আঁকার এটাই সময়। আমরা যদি সিস্টেম করতে পারি যে, একটা কম্প্রিহেন্সিভ আইন হবে। সেই আইনের মধ্যে সব প্রতিষ্ঠান চলে আসবে। এতে একটা তফসিল দিয়ে সবগুলো নির্বাচন করতে পারব।’
এ বিষয়ে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মতো সফল স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায়ও মেয়র ও চেয়ারম্যান সরাসরি নির্বাচিত হন না। এর পরিবর্তে কাউন্সিলর ও সদস্যরা নির্বাচিত হন এবং তারা কাউন্সিলের মধ্যে একটি কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করে থাকেন।
ড. তোফায়েল জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশেও একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এতে স্থানীয় সরকারের পাঁচ স্তরের নির্বাচন ব্যয় অনেক কমে আসবে। বাঁচবে সময়। অপেক্ষাকৃত অনেক কম জনবল লাগবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের শাস্তির পরিকল্পনা সংস্কার কমিশনের
তিনি আরও বলেন, হিসাব করে দেখেছি, গত কমিশন যে স্থানীয় নির্বাচন করেছে এতে ২৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ১৯ থেকে ২০ লাখ লোক লেগেছে। ২২৫ দিনের মতো সময় লেগেছে। তাই স্থানীয় নির্বাচনে যদি পার্লামেন্টারি সিস্টেম নিয়ে আসি। তাহলে খরচ চলে আসবে ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে। লোক লাগবে আট লাখ। সময় লাগবে ৪৫ দিন।
এই স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বলেন, বর্তমানে যা আছে তা দিয়ে যদি স্থানীয় নির্বাচন করতে চান, তাহলে পাঁচটি আইন দিয়ে পাঁচটি নির্বাচন করতে হবে। এতে জাতীয় নির্বাচনের আগে তা করা সম্ভব কিনা, তা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে।