প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, বেশ কয়েকটি কোম্পানি দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হলে বাংলাদেশ শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য জাপানকে আরও জায়গা বরাদ্দ করবে।
তাদের দেশের অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, জাপানের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদল প্রধানিমন্ত্রীকে এ তথ্য জানালে উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ইপিজেডে জাপানকে জায়গা দিয়েছে, জাপান শিল্পকারখানা স্থাপন করতে চাইলে আমরা আরও (জায়গা) দিতে পারি।’
আরও পড়ুন: সরকার উৎখাতের হুমকি বা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনো লাভ হবে না: প্রধানমন্ত্রী
এদিন জাপানের জেনারেল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক কমিটির পরিচালক ও হাউস অব কাউন্সিলর নাকানিশি ইউসুকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
জাপানি প্রতিনিধি দল বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান উন্নয়ন অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং আরও জোরদার করতে হবে।
প্রতিনিধি দল বলেন, জাপান বাংলাদেশে মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে কাজ করছে। ‘জাপান অবকাঠামোগত উন্নয়নে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পে অবদান রাখছে।’
ঢাকা ও নারিতা সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রশংসা করে তারা বলেন, এতে যোগাযোগের উন্নতি হবে।
জাপানি প্রতিনিধিদল ভারত মহাসাগরকে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য শান্তিপূর্ণ রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে বিদেশে চাকরি করতে যাওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
তারা নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষায় বাংলাদেশের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অনেক বেশি, কারণ সরকার মেয়েদের বিনামূল্যে শিক্ষা দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একটি সামুদ্রিক অ্যাকোয়ারিয়াম নির্মাণে জাপানের সহায়তাও চেয়েছেন।
এর আগে নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইয়োহেই সাসাকাওয়া গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে ইয়োহেই সাসাকাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য নিপ্পন ফাউন্ডেশন ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি এবং বলছি যে তাদের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বেঁচে যাওয়া ৮৪ বছর বয়সী ইয়োহেই সাসাকাওয়া বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরেন।
তিনি কুষ্ঠরোগ নির্মূল এবং কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাসাকাওয়া চলতি বছরের অক্টোবরে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় কুষ্ঠ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত আইডব্লিউএএমএ কিমিনন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সবার সঙ্গে সমানভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে: প্রধানমন্ত্রী