গ্লোবাল সেন্টার অন দ্য অ্যাডাপটেশন (জিসিএ)-এর স্থানীয় অভিযোজন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় স্থানীয় অভিযোজন কর্মসূচি প্রবর্তনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশের প্রথম পুরস্কার অর্জন করে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্রফেসর প্যাট্রিক ভি. ভারকুইজেন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই পুরস্কার হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে প্রণীত জলবায়ু অভিযোজন কর্মসূচি গ্রহণে নেতৃস্থানীয় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ এই পুরস্কার অর্জন করেছে।’
তিনি বলেন, জিসিএ'র নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী পুরস্কার জয়ী বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকবেন।
লোকাল গভর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (এলওজিআইসি) জন্য ইনোভেশন ইন ডেভেলভিং ফাইন্যান্স ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল লোকাল অ্যাডাপটেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড পাওয়া প্রথম দেশ হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ।
পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গ্রহণ করতে পেরে তিনি গভীরভাবে সম্মানিত হয়েছেন, যার অটল সহনশীলতা এবং উদ্ভাবনী চেতনা সর্বদা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছে।
আরও পড়ুন: আশ্রয়ণ প্রকল্প: মঙ্গলবার আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করবেন শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, 'এই স্বীকৃতি টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু সহনশীলতার প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন এবং সমৃদ্ধ ও সহনশীল ভবিষ্যতের দিকে আমাদের যাত্রায় গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের অমূল্য সহায়তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে ভারকুইজেনকে অবহিত করেন। ‘আমরা নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি।’
উন্নত দেশগুলো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সহায়তায় জলবায়ু তহবিলে তাদের প্রতিশ্রুত অর্থ দেওয়ার অঙ্গীকার রক্ষা করেনি বলেও একমত হন প্রধানমন্ত্রী এবং জিসিএ'র সিইও।
প্রফেসর প্যাট্রিক ভারকুইজেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কর্মসূচিতে জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ প্রদানে শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এই দাবির পক্ষে আরও সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন: আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের আরও ১৮,৫৬৬টি বাড়ি হস্তান্তর প্রধানমন্ত্রীর
তিনি ডেনমার্কের জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ ছাড়ের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান, অন্যথায় ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থ ফেরত পাঠানো হবে।
জিসিএ নেদারল্যান্ডসের রটারডামে অফিস থাকায় ঢাকার পাশে প্রকৃতির প্রতীকী একটি ভ্রাম্যমান অফিস নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অফিস নির্মাণের জন্য ঢাকার বাইরে কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা বিবেচনার পরামর্শ দেন।
প্রফেসর ভারকুইজেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা এবং স্থানীয়ভাবে উন্নত অভিযোজন কর্মসূচির প্রশংসা করেন।
জিসিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আপনার ভূমিকা আমাকে উৎসাহিত করেছে। আমি যেখানেই যাই সেখানেই জলবায়ু অভিযোজনের জন্য বাংলাদেশ ও আপনার (প্রধানমন্ত্রী) কথা বলি। সুতরাং আপনারা আমাকে দূত হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রতিটি গ্রামকে নাগরিক সুবিধার আওতায় আনা হবে: প্রধানমন্ত্রী