জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাত্রাবাড়ীর ইমাম হাসান তাইম হত্যার ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাজ্জাদ-উজ্জামানকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত। একই সঙ্গে তাকে অবিলম্বে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২০ আগস্ট) বিচারপতি মো. রেজাউল হকের বিশেষ চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। তাইম হত্যার ঘটনায় করা মামলাটি আন্তর্জাকি অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। এ সময় অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হেলাল আমিন উপস্থিত ছিলেন।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক বলেন, এসআই সাজ্জাদ-উজ্জামানকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত। একই সঙ্গে এসআই সাজ্জাদ-উজ্জামানকে অবিলম্বে আত্মসমর্পণের করতে বলেছেন আদালত।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হেলাল আমিন বলেন, এ মামলায় গত ২০ মে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি কাজী এবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এসআই সাজ্জাদ-উজ্জামানকে জামিন দেন। পরে তিনি কারামুক্ত হন। আজ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত তার জামিন স্থগিত করেছেন। একই সঙ্গে এসআই সাজ্জাদ-উজ্জামানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এসআই সাজ্জাদ উজ্জামানের জামিন এবং কারামুক্ত হওয়া নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এমন প্রেক্ষাপটে ১৯ আগস্ট সচিবালয়ের সামনে এসআই সাজ্জাদ-উজ্জামানকে পুনরায় গ্রেপ্তারের দাবি জানায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতরা। তারা আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের পদত্যাগ ও জামিন প্রদানকারী দুই বিচারপতির অপসারণের দাবি তোলেন।
পড়ুন: জুলাই শহীদদের আত্মত্যাগই হবে আগামী বাংলাদেশের নির্মাণরেখা: প্রধান উপদেষ্টা
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এক ফেসবুক পোস্টে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডে শহীদ পরিবারের করা একটি মামলায় হাইকোর্ট পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্যকে জামিন দিয়েছেন। এটি নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিক কারণেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তবে এই জামিনের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। হাইকোর্ট দেশের উচ্চ আদালত। হাইকোর্ট বা উচ্চ আদালত আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারের অধীনে নয়। জামিন বা হাইকোর্টের অন্য কোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাই আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।
হাইকোর্ট উচ্চ আদালত হলেও তার সিদ্ধান্ত প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে ওই জামিনাদেশের বিরুদ্ধে তাই আপিল করা হয়েছে। জামিন বাতিল হলে পুলিশ ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করবে।