নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি তার সমর্থনের জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস রবিবার (২৮ আগস্ট) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ওবামার সই করা চিঠির একটি ছবি শেয়ার করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম রাষ্ট্রপতির চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মানুষের পরিবার এবং সমাজকে দারিদ্র্যমুক্ত করে তাদের ক্ষমতায়নের জন্য আপনার প্রচেষ্টা দ্বারা দীর্ঘকাল ধরে আমি অনুপ্রাণিত হয়ে আসছি। ২০০৯ সালে হোয়াইট হাউসে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়ে আমি বলেছিলাম, আপনার কর্মকাণ্ড লাখ লাখ মানুষকে তাদের নিজস্ব সম্ভাবনার কথা ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘এটা আপনাকে শক্তি জোগাবে যে, যেসব মানুষের প্রতি আপনি আপনার মেধা কাচে লাগিয়েছেন এবং আমাদের মধ্যে যারা সকলের জন্য আরও ন্যায়সঙ্গত অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছি, আপনি তাদের সকলের হৃদয়ে রয়েছেন। আমি আশা করি, আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার মতো স্বাধীনতা পাবেন।’
প্রসঙ্গত, বারাক ওবামা টানা দুইবার (২০০৯ থেকে ২০১৭) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ক্ষমতাসীন ডেমোক্রক্র্যাটিক পার্টির সদস্য ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা চালানোর রাখার নির্দেশ
এছাড়া, রবিবার (২৭ আগস্ট) দেশের ৩৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক ঢাকার ৩ নম্বর শ্রম আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় বাংলাদেশের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে ঘটা সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেছেন।
এতে তার আইনজীবীদের যুক্তি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, মামলায় আনা অভিযোগগুলো দেওয়ানি প্রকৃতির, তবুও সরকার একটি ফৌজদারি মামলা করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অস্বাভাবিক তাড়াহুড়ো করে মামলা নিষ্পত্তিতে সরকারের ভূমিকা সম্প্রতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’
ড, ইউনূস এর আগেও মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে এতে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার আড়ালে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে এবং বিশ্বের কাছে একটি নেতিবাচক বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
পাবলিক ডোমেনে থাকা মামলার নথি অনুসারে, কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) কর্মকর্তা রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের কার্যালয় পরিদর্শন করে শ্রম আইনের লঙ্ঘন দেখতে পান।
২০২১ সালে ডিআইএফই-এর করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১০১ জন কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি, কর্মচারী অংশীদারিত্ব ও কল্যাণ তহবিল গঠন এবং কোম্পানির ৫ শতাংশ লভ্যাংশ কর্মচারীদের পরিশোধ করা হয়নি।
ড. ইউনুস গ্রামীণ টেলিকমের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতিত্ব করেন, যা একটি ট্রাস্ট হিসেবে নিবন্ধিত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তার সহযোগী আশরাফুল হাসান, মো. শাহজাহান ও নূর জাহান বেগম।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় বিচার চলবে
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন প্রশ্নে রুল ২ সপ্তাহে নিষ্পত্তির নির্দেশ