তৃতীয় ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট ২০২৪-এর মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশি বন্ধুদের শিগগিরই ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অন্যথায় তারা গুরুত্বপুর্ণ কিছু তথ্য নাও পেতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার অধিকাংশই বিশ্বের দেয়ালচিত্রের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। ১২-১৩ বছর বয়সি শিক্ষার্থী ও শিশুরা ৪০০ বছরের পুরোনো এই শহরের দেয়ালে নতুন গণতান্ত্রিক পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশের চিত্র আঁকছে।’
উদ্বোধনী অধিবেশনে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নোবেল এ বিজয়ী বলেন, এ বিষয়ে কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা বা দিকনির্দেশনা নেই। ‘কারো কাছ থেকে অর্থ সহায়তাও পায়নি।'
আরও পড়ুন: আমাদের কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের স্থান দিতে হবে: অধ্যাপক ইউনূস
তিনি বলেন, এটি দ্বিতীয় বিপ্লবের উদ্দেশ্যগুলোর প্রতি তাদের আবেগ ও অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
ইউনূস বলেন, তরুণ শিক্ষার্থী ও শিশুরা দোকান থেকে তাদের জন্য রং ও ব্রাশ কিনে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, ‘তারা তাদের নিজস্ব বিষয় এবং নিজস্ব বার্তা ফুটিয়ে তোলে। তারা যেসব বার্তাসহ গ্রাফিতি আঁকছেন তা যে কাউকে শিহরিত করবে। তরুণরা কী স্বপ্ন দেখছে তা যে কেউ এসবের মধ্যে পড়তে পারে। তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষার জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এবং এটি সারা বিশ্বে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারের জন্য সংগ্রামকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
তিনি বলেন, ‘প্রায় সাত দশক পরে আমাদের ছাত্রদের নেতৃত্বে দ্বিতীয় বিপ্লব গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মর্যাদা, সমতা ও অংশীদারিত্বমূলক সমৃদ্ধির জন্য তাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে গ্লোবাল সাউথ জুড়ে যুবকদের অনুপ্রাণিত করছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমি সবচেয়ে বয়স্ক 'তরুণ' হিসেবে এই বিপ্লবে অংশ নিতে পেরে এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। তাদের আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তাদের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূসকে সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটাই ছিল ইউনূসের প্রথম বহুপাক্ষিক বৈঠক।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আয়োজনে উদ্বোধনী অধিবেশনে রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান পর্যায়ের অতিথিরা ছিলেন।
এর আগে বাংলাদেশ ভ্রমণে ইচ্ছুক সাংবাদিকদের দ্রুত ভিসা অনুমোদনের জন্য বিদেশে তার সব মিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে স্বাগত জানান, যাতে তারা মাঠ পর্যায় থেকে প্রতিবেদন করতে পারেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শনিবার বলেন, 'গৌণ কোনো উৎস বা অতিরঞ্জিত কোনো প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রভাবিত না হয়ে তারা নিজেরাই পরিস্থিতি দেখে প্রতিবেদন তৈরি করাই ভালো।’
শফিউল আলম বলেন, সাংবাদিকদের ভিসার আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে নয়াদিল্লি ও হংকংয়ে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাদের ফোন করেছেন।
আলম বলেন, 'আমরা উন্মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে চাই যেখানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে কোনো আপস করা যাবে না।’
তাই বাংলাদেশ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে কেউ প্রতিবেদন করতে চাইলে তাকে স্বাগত জানানো হবে বলে জানান প্রেস সচিব।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানালেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী