অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
আদানির সময়সীমা নিয়ে আমরা খুবই মর্মাহত: প্রেস সচিব
ভারতের আদানি পাওয়ারকে অর্থ প্রদানে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
একই সঙ্গে জোর দিয়ে বলেছে, যতই শক্তিশালী হোক না কেন, কোনো একক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীর কাছে জিম্মি হবে না সরকার।
৭ নভেম্বরের মধ্যে আর্থিক সমস্যার সমাধান না হলে, আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘যদি এটি সত্য হয়, তবে আমরা বলব যে আমরা হতাশ এবং অত্যন্ত মর্মাহত।’
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আলম বলেন, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এখনও এ ধরনের কোনো চিঠি পায়নি, তবে আদানিকে দ্রুত অর্থ প্রদানের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের প্রেস সচিব হলেন শফিকুল আলম
অর্থ পরিশোধ বাকি থাকার জন্য তিনি পূর্ববর্তী ‘স্বৈরাচার সরকারকে’ দায়ী করেন।
আলম বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে শুরু করায় তারা পেমেন্ট ত্বরান্বিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। ‘রিজার্ভ আবার বাড়তে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি আন্তর্জাতিকভাবে আমরা অর্থ পরিশোধ করতে সক্ষম হব।’
এ সময় প্রেস উপসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই চুক্তিতে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই।
‘বিষয়টি দুই পক্ষের মধ্যে। তাদের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে: একটি বেসরকারি সংস্থা এবং অন্যটি বাংলাদেশ সরকার।’
শনিবার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই চুক্তিতে ভারত সরকারের কোনা ভূমিকা নেই।’
এই মুহূর্তে শেয়ার করার মতো আর কোনো তথ্য তার কাছে নেই বলে জানান মুখপাত্র।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানি পাওয়ার অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সরকার ৭ নভেম্বরের মধ্যে তাদের বকেয়া পরিশোধ না করলে তারা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।
বকেয়া পাওনার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ হ্রাসের পর, আদানি পাওয়ার বাংলাদেশ সরকারকে মোট প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের পাওনা মেটানোর বিষয়ে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে।
এর আগে আদানি পাওয়ার বকেয়া অর্থ নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) ৩১ অক্টোবরের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল এবং নিরাপদ পেমেন্ট নিশ্চিত করতে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট লেটার (এলসি) দিয়েছিল।
বিপিডিবি কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে বকেয়া অর্থের জন্য এলসি ইস্যু করার চেষ্টা করলেও বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির শর্তের সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গেছে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে ডলার সংকটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড ৩১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়েছে, যা বাংলাদেশে বিদ্যমান বিদ্যুৎ ঘাটতিকে আরও খারাপ করেছে।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের (পিজিবি) ওয়েবসাইটের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, ১ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় আদানির প্ল্যান্ট ১৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার বিপরীতে ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
৪ দিন আগে
অন্য ইস্যু নয় ভোটের দিকে নজর দিন: সরকারকে ফখরুল
অন্যান্য ইস্যু থেকে সরে এসে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের দিকে নজর দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এক আলোচনা সভায় তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান, যাতে তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা ক্ষুণ্ন না হয়।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'অন্য ইস্যুতে মনোযোগ না দিয়ে নির্বাচনের দিকে নজর দিন।’
তিনি আরও বলেন, দেশের অস্তিত্ব রক্ষা ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: সাংবিধানিক বিষয়ে তাড়াহুড়ো করা উচিৎ নয়: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তারেক
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।
ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছে।
তিনি বলেন, 'আমরা আশা করেছিলাম যে তারা (সরকার) এটি গঠনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে। যদিও আমরা এটিকে বড় ইস্যু মনে করি না। আমরা আশা করি কমিটি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে।’
এই সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের প্রধান পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে তার কোনো রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই।
তিনি বলেন, 'আমি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বলতে চাই, আপনি বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত সম্মানিত এবং বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে গভীরভাবে ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে। তারা চায় এটা অব্যাহত থাকুক। আমার অনুরোধ, আপনারা সজাগ থাকুন, যাতে আপনার অবস্থান ক্ষুণ্ন না হয়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ফিরতে পারবে না: বিএনপি
১ সপ্তাহ আগে
সাংবিধানিক বিষয়ে তাড়াহুড়ো করা উচিৎ নয়: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তারেক
সাংবিধানিক বিষয়ে সরকারের কোনো তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয় উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে যেকোনো মূল্যে অশুভ মহলের চক্রান্ত প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এই আহ্বান জানান।
তারেক রহমান দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহযোগীদের প্রচারিত কোনো ষড়যন্ত্র বা গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ফিরতে পারবে না: বিএনপি
বিএনপি নেতা বলেন, 'হাজার হাজার আহত মানুষের আর্তনাদ ও বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে তা যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, আমি বিশ্বাস করি, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারলে ষড়যন্ত্র করে কেউ জনগণের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন ব্যর্থ না হয়, কারণ এ ধরনের ব্যর্থতা গণতন্ত্রপন্থী ও বাংলাদেশের সমর্থক শক্তির জন্য একটি ধাক্কা হিসেবে গণ্য হবে।
বিএনপির এই নেতা উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমনকি সরকারের মধ্যেও নানা আলোচনা-বিশ্লেষণ চলছে। ‘বর্তমান সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেন শপথ নিয়েছে বা বিপ্লবী সরকার কিনা তা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন।’
এসময় তারেক আশঙ্কা করেন যে, গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন সরকারের গতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং এর উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাই বিএনপি মনে করে, জাতীয় নিরাপত্তা বা সাংবিধানিক বিধানের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত পরিহার করা অপরিহার্য। পরিবর্তে, একটি সুচিন্তিত এবং সুবিবেচিত পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হয়।’
শেখ হাসিনার পতনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু মতপার্থক্য দেখা দিলেও বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি আমাদের লক্ষ্য একই- বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। তাই বিএনপি আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কোনো জায়গা দেখছে না।’
যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ৯ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: বিএনপির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী নেতাদের বৈঠক
নির্বাচিত সরকার এখন সময়ের দাবি: বিএনপি
১ সপ্তাহ আগে
অনিশ্চয়তায় প্রশাসনে স্থবিরতা, দায়িত্ব বণ্টনের জটিলতা কাটছেই না
আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু এখনও স্বাভাবিক হয়ে উঠেনি প্রশাসনিক কার্যক্রম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি অত্যন্ত ধীর এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পেরও প্রায় একই দশা।
সচিবালয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন পদে কর্মকর্তাদের মধ্যে বদলি নিয়ে আতঙ্ক কাজ করছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যারা নিয়োগ ও পদোন্নতি পেয়েছে, তাদের মধ্যে এই আতঙ্ক বেশি দেখা যাচ্ছে। ফলে মন্ত্রণালয়ের কাজে এসেছে ধীর গতি।
এছাড়াও বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে এখনও সাবেক সরকারের সময়কালে নিযুক্ত সচিব রয়েছেন। ওএসডি বা অবসরে যেতে হয় কি না- এ নিয়ে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সচিব-জেলা প্রশাসক নিয়োগ
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চিত চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া ৮ জন সচিব বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ শুরু করলেও সবার সঙ্গে মিলিয়ে কাজ করতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সচিব পদ না পেয়ে বঞ্চিত অবস্থায় অবসরে গিয়েছেন তারা। দীর্ঘদিন পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে তাদের আবার চুক্তিতে সচিব পদে নিয়োগ দেওয়ায় সাবেক সরকারের আমলের বর্তমান কর্মকর্তারা তাদের স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারছেন না। যে কারণে কাজের গতি কমে গিয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সরকারের আমলে নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলমান প্রকল্পগুলোর অর্থ কাটছাঁট করতে বলেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পগুলো বুঝতেও সময় নিচ্ছেন উপদেষ্টারা। আবার কিছু প্রকল্পের চলমান কাজ বন্ধ রয়েছে। নতুন করেও প্রকল্প নেওয়ার কোন পরিকল্পনা নেই এই সরকারের।
এর বাহিরেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাঠ লেভেলের ছোটখাটো উন্নয়নমূলক কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। এমনকি বিভিন্ন ভাতাও সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বেশকিছু সরকারি ভাতা যথাসময়ে দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গ্রামে কাবিটা ও কাবিখার কাজও বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যমান সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসহযোগিতার কারণে দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
চলতি সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘যেকোনো সরকার যখন দায়িত্ব নেবে, তার নিজস্ব টিম (দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) লাগবে। তাহলে পুরোনো টিমকে তো সরে যেতেই হবে।’
আরও পড়ুন: ‘দ্রুত সংস্কারের পর নির্বাচনই দেশের রাজনৈতিক সমাধান’
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা বিপ্লব হয়েছে। বিপ্লবের পরে কোনোকিছু আগের সিস্টেমে চলে না, কিন্তু আমরা এখনও আগের সিস্টেম ধরে রেখেছি। প্রশাসনের কারো কারো অসহযোগিতার কারণে দেশে স্থবিরতার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সিস্টেম ভাঙার প্রয়োজন হলে সিস্টেম ভাঙা হবে, প্রয়োজন দেখা দিলে প্রশাসনে অসহযোগীদের স্থলে নতুন নিয়োগ নিয়েও সরকার ভাববে।’
এর আগে গত মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে, প্রশাসনে স্থবিরতা বিরাজ করছে স্বীকার করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনে স্থবিরতা তো আছে। এটা আমরা লক্ষ্য করছি। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে অসহযোগিতা পাচ্ছি। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থবিরতা কেটে যাবে।’
এছাড়াও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বর্তমানে সচিব নেই। এসব দপ্তরে দায়িত্ব পাওয়া অতিরিক্ত সচিবরা তাদের রুটিন কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। তারা কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না। এর ফলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি অত্যন্ত ধীর।
এমন পরিস্থিতিতে সব ব্যাচের বঞ্চিত যোগ্য কর্মকর্তাদের উপযুক্ত পদে পদায়নের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন ব্যাচের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অনেকে।
শেখ হাসিনার সময় চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া অন্তত ১০০ কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল হয়েছে। পাশাপাশি অবসরে থাকা হাসিনার সরকারের আমলে বঞ্চিত ৮ কর্মকর্তাকে সচিব পদে চুক্তিতে নিয়োগের পর তাদের সিনিয়র সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চলতি মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যোগ হতে পারে নতুন মুখ
তাদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে নিয়োগ পেয়েছেন বিসিএস ১৯৮২ নিয়মিত ব্যাচের মেধাতালিকায় প্রথম হওয়া ড. শেখ আবদুর রশিদ, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. এম এ মোমেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব এহছানুল হক ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনি। মূলত তারাই এখন প্রশাসন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব পদে নিয়োগ পেয়েছেন বিসিএস ১৯৮৪ ব্যাচের সিদ্দিক যোবায়ের এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হয়েছেন ১৯৮৫ ব্যাচের এ এস এম সালেহ আহমেদ।
হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছর পর আগস্টে পদোন্নতি পেয়ে অবসরে গেছেন বেশ কয়েকজন অতিরিক্ত সচিব। বঞ্চিত ২০৬ অতিরিক্ত সচিবের মধ্য থেকে যে চারজনকে সচিব করা হয়েছে তারা হলেন- তথ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার উল্লাহ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের মো. ফাহিমুল ইসলাম এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বেগম মাহবুবা ফারজানা।
এখন পর্যন্ত এর বাইরে অন্য ব্যাচের বঞ্চিত কর্মকর্তাকে সচিব পদে নিয়োগের খবর পাওয়া যায়নি। তবে শুধু একটি ব্যাচের বঞ্চিতদের মূল্যায়ন ভালো চোখে দেখছেন না বিসিএস ১৯৮২ (বিশেষ) ব্যাচ, ১৯৮৪ ব্যাচ, ১৯৮৫ ব্যাচ, ১৯৮৬ ব্যাচ, নবম, দশম, একাদশ ও ত্রয়োদশ ব্যাচের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অনেকে।
তাদের দাবি, বিসিএস ১৯৮২ নিয়মিত ব্যাচের কর্মকর্তারা অন্তত এক যুগ আগেই অবসরে গেছেন। অথচ বর্তমানে সচিব হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন বিসিএস ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে এই ব্যাচের পাঁচ-ছয়জন সচিবও হয়েছেন। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে তাদের ব্যাচের বঞ্চিত কর্মকর্তাদেরও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: প্রশাসনে স্বচ্ছতার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দ্রুত সংস্কারের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
দীর্ঘ বঞ্চনার পর যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া ১৩৩ জনের মধ্যে ৬৫ জনকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। ৪৫ জন পূর্বের পদে রয়েছেন। এসব দপ্তরে দায়িত্ব পাওয়া অতিরিক্ত সচিবরা তাদের রুটিন কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। তারা কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না। বাকিদের পদায়নের ফাইল ঘুরছে।
হাসিনার সরকারের আমলে বঞ্চিত বিসিএস ১৯৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তা মো. সলিমুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘শুধু নিয়মিত নামাজ পড়ি বলে বিএনপি-জামায়াত তকমা দিয়ে আমাকে পাঁচ-ছয়বার পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে। যোগ্যতা থাকার পরও আমাকে সচিব বানানো হয়নি। যুগ্ম সচিব হিসেবে ২০২০ সালের ১৭ মে অবসরে যেতে হয়েছে। অথচ আমার ব্যাচের হেলালুদ্দীন আহম্মদ, ফয়েজ আহমদ, আনিছুর রহমান, সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সত্যব্রত সাহা, আক্তার হোসেন, শহীদুজ্জামান, আকরাম আল হোসেনসহ অনেকে সচিব হয়েছেন। এমনকি আমার সিরিয়ালের বহু পরের কর্মকর্তা কবীর বিন আনোয়ার ক্যাবিনেট সচিব হয়েছেন। সুতরাং সব ব্যাচেই বঞ্চিত কর্মকর্তা আছেন। তাদেরও মূল্যায়ন করা দরকার।’
বিসিএস ১৯৮৪ ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব আবু মোহাম্মদ ইউসুফ ইউএনবিকে জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতি চেয়ে আবেদন করেছিলাম। বিএনপি-জামায়াত তকমা দিয়ে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমাকে সচিব বানানো হয়নি। ব্যাচের মেধাতালিকায় আমার পরের জন সুবীর কিশোর চৌধুরীকেও সচিব বানানো হয়েছিল। আমার ব্যাচসহ প্রশাসনে তার জুনিয়র অন্তত দেড়শ কর্মকর্তাকে সচিব বানানো হয়েছে। সুতরাং অন্যান্য ব্যাচেও যারা যোগ্যতা থাকার পরও বঞ্চিত হয়েছেন তাদের এখন মূল্যায়ন করা উচিত।’
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস-উর রহমান ইউএনবিকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছেন দুই মাসেরও বেশি হয়েছে। তারপর আমি নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই প্রশাসনকে একটা সিস্টেমে দাঁড় করাতে কাজ করছি। গত ১৫-১৬ বছরের সমস্যা এই অল্প সময়ে সমাধান করা সম্ভব না। কোন মন্ত্রণালয়ে কাকে কোন দায়িত্ব দেওয়া হবে এবং মন্ত্রণালয়গুলোর দপ্তর বা সংস্থাপ্রধান কাকে বানানো হবে- এসব বিষয় বিবেচনা করে, কে ভালো ও দক্ষ তাকে খুঁজে বের করতে একটা তো সময় লাগবেই। তবে আমরা আশা করছি খুব দ্রুত সময়েই সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে যোগ্য লোক পদায়নের কাজ শেষ হবে। তখন কাজের গতি আরও বাড়বে।’
আরও পড়ুন: প্রশাসনিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
১ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ও আইনের শাসনের প্রতি ইইউয়ের নজর
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যাপক সমর্থন ও জনপ্রিয়তা রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষে গণতান্ত্রিক নির্বাচন দিতে হবে, যার মাধ্যমে নতুন সংসদ এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠিত হবে। এর ফলে মৌলিক অধিকারের প্রতি 'আইনের শাসন ও শ্রদ্ধার' প্রতি মানুষ সচেতন থাকবে।
ঢাকায় আসার পর ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান ইউএনবিকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
‘আকাশছোঁয়া’ উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকলেও পরিবর্তন সবসময়ই ‘কঠিন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এগুলো হচ্ছে এমন নীতি যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কের মূল বিষয়।’
বাংলাদেশ-ইইউ অংশীদারত্বকে দ্রুত বিকাশমান ও গতিশীল হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছর দুই পক্ষের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে।
১ সপ্তাহ আগে
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের দশম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বেশ কিছুদিন ধরে সরকারি চাকরি প্রত্যাশীরা চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার আবেদন জানিয়ে আন্দোলন করছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ-সংক্রান্ত পর্যালোচনা কমিটি মেয়েদের ৩৭ বছর ও ছেলেদের ৩৫ বছর করার সুপারিশ করেছিল।
আরও পড়ুন: সরকাসরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর যৌক্তিকতা আছে: কমিটির আহ্বায়করি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সুপারিশ কমিশনের
২ সপ্তাহ আগে
নির্বাচনি রোডম্যাপ না থাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সন্দেহ করছে জনগণ: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণায় বিলম্বের কারণে দেশের জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সন্দেহের চোখে দেখছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর ডেমরায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী আওয়ামী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, 'আমি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বলতে চাই, আপনি সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যান। কিন্তু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে এত দ্বিধা কেন? গণতন্ত্র মানে যাই ঘটুক না কেন, মানুষকে পরিষ্কারভাবে জানাতে হবে, কারণ তাদের এসব বিষয়ে সন্দেহ আছে।’
তিনি বলেন, সরকার রাষ্ট্রীয় সংস্কারের জন্য বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছে, তবে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা বা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে কত দিন সময় লাগবে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
আরও পড়ুন: সাংবিধানিক-রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির প্রচেষ্টা বানচালে ঐক্যের আহ্বান বিএনপির
বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণ সরকার গঠনের জন্য তাদের প্রতিনিধি ও দল বেছে নিতে ১৫ বছর ধরে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করেছে। ‘স্বচ্ছতা ও রোডম্যাপ থাকা গণতন্ত্রের দুটি অপরিহার্য শর্ত। আপনি সময়সীমা নিয়ে দ্বিধায় আছেন এবং জনগণ এটিকে কিছুটা সন্দেহের চোখে দেখছে।’
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত সাতজনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে ডেমারের কোনাপাড়ায় 'আমরা বিএনপি পরিবার' এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি, যিনি বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক সম্মান বয়ে এনেছেন। ‘কিন্তু তার আগে ভাবতে হবে কী করলে জনজীবন সহজ হতে পারে এবং কোথায় মানুষ স্বস্তি খুঁজে পায়। নিম্ন আয়ের মানুষ যাতে ঠিকমতো খেতে পারে তা নিশ্চিত করতে বাজার নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
তিনি বলেন, 'আপনারা (সরকার) অনেক পণ্যে শুল্ক কমিয়েছেন, কিন্তু বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বাজার সিন্ডিকেটের কারণে চিনি, চাল, ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের দাম কমেনি। বাজার নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী সিন্ডিকেটের এসব সদস্যদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনুন।’
অন্যথায়, তা হবে গণতন্ত্র ও আন্দোলনের চেতনা এবং জীবন উৎসর্গকারীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের মুখে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
রিজভী আরও বলেন, ‘তিনি(শেখ হাসিনা) প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনেননি। বরং, যারা তার বিরোধিতা করেছিল তাদেরকে তিনি কারারুদ্ধ করেছিলেন। এর পরও ক্ষমতা আকড়ে থাকতে ব্যর্থ হলে তিনি হত্যাকাণ্ড, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, যা বিশেষ করে জুলাই ও আগস্ট মাসে স্পষ্ট হয়েছে।’
আরও পড়ুন: জাতি সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট প্রত্যাশা করে না: বিএনপি
২ সপ্তাহ আগে
রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
রাষ্ট্রপতির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে যথাসময়ে গণমাধ্যমকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের অংশীদার। এটা (বিএনপির সঙ্গে আজকের বৈঠক) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের অংশ। কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা তা সময়মতো আপনারা জানতে পারবেন।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের সম্ভাবনা নিয়ে সাংবাদিকদের বারবার প্রশ্নের জবাবে আলম এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ সম্পর্কে আশ্বস্ত করে প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা সুস্থ আছেন এবং যথারীতি বৈঠক করছেন।
আরও পড়ু্ন: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবন ঘিরে বিক্ষোভ, নিরাপত্তা জোরদার
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের বিষয়ে আইন উপদেষ্টার অবস্থানকে সরকার সমর্থন করে।
তিনি আরও বলেন, 'আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এর আগে রাষ্ট্রপতির বিষয়ে যা বলেছেন, তার সঙ্গে সরকার একমত। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র না পাওয়ার বিষয়ে মিথ্যাচারের জন্য রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, রাষ্ট্রপতির বক্তব্য তার শপথ লঙ্ঘন করেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র না পেয়ে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
ড. আসিফ বলেন, 'শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি বলে রাষ্ট্রপতির দাবি মিথ্যা ও শপথের লঙ্ঘন।
আরও পড়ু্ন: রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ
২ সপ্তাহ আগে
দেশের প্রতিটি সেক্টরে গ্রহণযোগ্য সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা
গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, দেশের প্রতিটি সেক্টরে গ্রহণযোগ্য সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে অনেক কথা-বার্তা হচ্ছে। সংস্কারের কার্যক্রম চলমান আছে। যতটুকু সময় পাব, শুধু এই সংস্কারটাই করে দিয়ে যাব।
সোমবার (৭ অক্টোবর) রাজউক অডিটরিয়ামে বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সংস্কারে রাজউকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক পরিবর্তন লাগবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: সংস্কার ছাড়া নির্বাচন গ্রহণ করতে পারবেন: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার প্রশ্ন
আদিলুর রহমান খান বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোতে এখনও অনেক অযৌক্তিক সুযোগ-সুবিধা ও অসংখ্য কোটা বিদ্যমান রয়েছে।
একেকজন এসে বলছে, এই কোটার কারণে আমরা এতগুলো পদ নেব, অন্যপক্ষ বলছে এই কোটায় আমার আরও বেশি লাগবে।
আমি বলি যে, আর কেন এসব কোটা লাগবে? এগুলো জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন না কেন? সমস্ত কোটা উঠিয়ে দিয়ে ঢাকায় লটারির মাধ্যমে কেন জমি দেওয়া হয় না? এই সুবিধাগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, যেখানেই অযৌক্তিক সুযোগ-সুবিধা ও কোটা থাকবে, সেখানেই তরুণদের এগিয়ে আসার পথ তৈরি করে দিতে হবে। আমরা তো এই দরজাটা বন্ধ করে রাখি, যেন তারা আসতে না পারে। এই দরজাগুলো খুলে দিতে হবে। তাহলেই একটি কাঙিক্ষত সংস্কার দেশের মানুষ পাবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে হাজার হাজার মানবাধিকার কর্মী তৈরি হয়েছে, যারা দেশকে বদলে দেওয়ার জন্য কাজ করছে। আমাদেরকে পাশে দাঁড়ানো দরকার। তাদের সঙ্গে নিয়ে এই সময়টাকে বদলে দেওয়া দরকার।
আদিলুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সংগঠন আছে, নাগরিকদের প্রতিষ্ঠান এবং প্রফেশনাল বডি আছে, সেগুলোকেও নগর উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা দরকার।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা ঢাকাকেও বদলে দিতে চাই। কিন্তু যেদিকেই তাকাবেন, দেখবেন কত নোংরা হয়ে আছে। শহরে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য কোনো গাছ নেই। সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ঢাকা শহর শুধু কংক্রিটের শহর হয়ে গেছে। এখানে গরিবের আবাসনের ব্যবস্থাটাও নাই। এই শহরটাকে আমরা বদলাতে পারব কিনা, এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইন বাংলাদেশ গোয়েন লুইস।
আরও পড়ুন: বেকারত্ব কমিয়ে আনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য: উপদেষ্টা নাহিদ
এবার শারদীয় দুর্গা পূজায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
১ মাস আগে
সংলাপে সব দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে: মাহফুজ আলম
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে সব রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিকভাবে সমর্থন দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘ সংলাপ শেষে শনিবার রাতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। তারা এটিকে তাদের নিজস্ব সরকার হিসেবে বিবেচনা করছে।’
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দুপুর আড়াইটায় এ সংলাপ শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। সংলাপে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো যোগ দেয়।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ শুরু আজ
মাহফুজ বলেন, সংলাপে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব চেয়েছে এবং বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশন রয়েছে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ সংলাপ অব্যাহত থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশন ডিসেম্বর মাসে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবে, তখন সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানো হবে।
‘সেই ঐকমত্যের ওপর সময়সীমা নির্ভর করছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতির কাজ একই সঙ্গে এগিয়ে যাবে।
সংলাপে নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, জনপ্রশাসন পুনর্বিন্যাস ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা এসব উদ্বেগ নিরসনে তার সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোকে জানান এবং তারা সবাই সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ৮ কোটি টাকা প্রদান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
১ মাস আগে