রাজধানীতে ব্যাপক আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে উদযাপিত হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব বৈসাবি-২০২৪।
আজ শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে রাজধানীতে বসবাসরত পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাহারি সাজে বৈসাবি উৎসবে অংশ নেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.মশিউর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ৯ টায় ঢাকার বেইলি রোডে অবস্থিত শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র হতে বৈসাবি র্যালি শুরু হয়ে বেইলি রোড ও রমনা পার্কের ভেতর দিয়ে প্রদক্ষিণ করে পার্কের লেকের প্রান্তে গিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন: ফুল ভাসিয়ে শুরু হয়েছে পাহাড়িদের বৈসাবি উৎসব
পরে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে রমনা লেকের পানিতে নর-নারী ও শিশুরা ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে এ উৎসবের সমাপ্তি হয়।
মশিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করার জন্য সবাই সম্মিলিতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাব। সেখানে কোনো হানাহানি, বিদ্বেষ থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ব এবং সেই একই লক্ষ্যে মূল ধারার সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে পার্বত্যবাসীর উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে সব সুযোগ-সুবিধা প্রদান অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে বৈসাবি উপলক্ষে শোভাযাত্রা
সচিব বলেন, পার্বত্য ৩ জেলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করা এবং ব্যাপক প্রচার ও প্রসার ঘটানোসহ পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার একটি অন্যতম অংশ হলো এই ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব। এখানে ৩ পার্বত্য জেলার ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতা ফুটে ওঠেছে। পার্বত্য অঞ্চলের ধর্মীয় ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান এবং সংস্কৃতির অবস্থাকে তুলে ধরতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় রাজধানীতে প্রতি বছর ২৯ চৈত্র পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ঐতিহ্যবাহী এ বৈসাবি উৎসবের আয়োজন করে আসছে।
মো.মশিউর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৈসাবি উৎসবের মাধ্যমে সব পার্বত্যবাসী ও বাংলাদেশের সব নাগরিকের সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ জিয়াউল করিম, অতিরিক্ত উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) বিধান ত্রিপুরা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার প্রধান ৩টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সমাজের বর্ষবরণ উৎসব হলো বৈসাবি। এটি তাদের প্রধান সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। এই উৎসবটি ত্রিপুরাদের কাছে বৈসুব, বৈসু বা বাইসু, মারমাদের কাছে সাংগ্রাই এবং চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের কাছে বিজু নামে পরিচিত। বৈসাবি নামরকরণও করা হয়েছে এই ৩টি উৎসবের প্রথম অক্ষরগুলো নিয়ে।
আরও পড়ুন: ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ৩ দিনের বৈসাবি উৎসব শুরু