বাংলাদেশে তীব্র তাপমাত্রার কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সহায়তায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মানবিক তহবিল হিসাবে ১ লাখ ৭৫ হাজার ইউরো (২ কোটি ২২ লাখ টাকারও বেশি) দিচ্ছে। বিগত সপ্তাহগুলোতে দেশের কিছু অংশে তাপমাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি।
ইইউর এই অর্থায়ন দাবদাহে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট।
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে যেসব অসুস্থতা দেখা দিতে পারে এবং কীভাবে তাদের প্রতিরোধ করা যায় সে সম্পর্কে সচেতনতা বার্তা প্রচারে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবীরা। তারা কুলিং স্টেশন চালানো, অ্যাম্বুলেন্স এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সরবরাহ করা ও পানীয় জল, ছাতা এবং ক্যাপ বিতরণের কাজ করছে।
খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের যেসব জেলায় তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি সেসব জেলায় এই সহায়তা কার্যক্রম চলমান থাকবে।
বিশ্বজুড়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজের (আইএফআরসি) দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া জরুরি তহবিলে (ডিআরইএফ) ইইউর দেওয়া ৮ মিলিয়ন ইউরো থেকে এই অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোর গ্রীষ্মের মাসগুলোতে দেশটি বারবার দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র তাপপ্রবাহের শিকার হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার ইইউ দূতাবাস জানায়, উচ্চ তাপমাত্রা নবজাতক এবং শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কারণ প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তাদের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কম। এছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং বয়স্করাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
রিকশাচালক, নির্মাণ শ্রমিক বা কৃষি শ্রমিকদের মতো যারা বাইরে কাজ করেন, দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চমাত্রায় তাপের সংস্পর্শে থাকায় তাদের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়াও জনবহুল এবং ঘিঞ্জি বস্তি এলাকার বাসিন্দারাও ঝুঁকিতে থাকেন কেন না সেখানকার ঘরগুলো বেশিরভাগই লোহার পাতের তৈরি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মানবিক সহায়তা দাতা।
বিশ্বজুড়ে দুস্থ মানুষের প্রতি ইউরোপীয় সংহতির প্রকাশের একটি মাধ্যম এই ত্রাণ সহায়তা।
এই সহায়তার লক্ষ্য জীবন বাঁচানো, মানুষের দুর্ভোগ প্রতিরোধ ও লাঘব করা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর অখণ্ডতা ও মানবিক মর্যাদা রক্ষা করা।
সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনস ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতি বছর সংঘাত ও দুর্যোগের শিকার লাখ লাখ মানুষকে সহায়তা করে থাকে। বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মানবিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে সবচেয়ে দুর্বল লোকদের সহায়তা দিয়ে থাকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।