বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া উভয়ই পারস্পরিক লাভজনক উপায়ে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে পারে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) কসমস ডায়ালগে মূল বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, ‘কোরিয়া ভারত, চীন বা যুক্তরাষ্ট্র নয় এবং (বাংলাদেশে) কৌশলগত স্বার্থ নেই।’
গত পাঁচ দশকে উভয় দেশের অর্জনের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রদূত বলেন, আগামী ৫০ বছরকে আরও সমৃদ্ধ করার এখনই উপযুক্ত সময়।
তিনি বলেন, এ জন্য উভয় দেশকে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
'বাংলাদেশ-সাউথ কোরিয়া রিলেশনস: প্রগনোসিস অব দ্য ফিউচার' শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করেছে কসমস ফাউন্ডেশন। যা তাদের অ্যাম্বাসেডরস লেকচার সিরিজের সর্বশেষ সংস্করণ।
কসমস ফাউন্ডেশনের সভাপতি, পণ্ডিত-কূটনীতিক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী আয়োজনটির সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন।
কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খান সমাপনী বক্তব্য দেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন কসমস গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ খান।
প্যানেল আলোচনায় ছিলেন- কসমস ফাউন্ডেশনের অনারারি অ্যাডভাইসর ইমেরিটাস সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান, রাষ্ট্রদূত (অব.) তারিক এ. করিম; মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারম্যান রুবানা হক; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসী।
১৯৭৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে দুই দেশ রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, উন্নয়ন সহযোগিতা এবং জনশক্তি বিনিময়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে আসছে। সম্প্রতি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। পুঞ্জীভূত অর্থের দিক থেকে বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগ পঞ্চম বৃহত্তম।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত জুতা ও চামড়া, আইসিটি, ওষুধ, জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ ভাঙা শিল্প, ব্লু ইকোনমি ও গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ, কৃষি ও কৃষি যন্ত্রপাতি, গ্রিনহাউস ও কার্বন ট্রেডিং স্কিমকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল ৯ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনের এক ফাঁকে বৈঠক করেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও গভীর করার অঙ্গীকার করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের রপ্তানি বহুমুখীকরণ, দু'দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি, শিক্ষা খাতে সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ, ফ্যাশন ডিজাইনে সহযোগিতা ও বিদ্যমান বাণিজ্যে মূল্য সংযোজনের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
সংলাপে সাবেক ও বর্তমান কূটনীতিক, পররাষ্ট্রবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা উপস্থিত ছিলেন।