রাজধানীর শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং লাঠিপেটায় শতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা। এ ছাড়া, তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
রোববার (৯ নভেম্বর) প্রাথমিকের শিক্ষকদের চারটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত জোট 'প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ' এর ব্যানারে কর্মসূচী পালন করছেন শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে একদিনের কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গতকাল শান্তিপূর্ণভাবে ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচির সময় পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে পাঁচ সহকর্মীকে আটক করে এবং শতাধিক শিক্ষক আহত হন। তাছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তাদের দাবিকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করেছেন। একারণে দুই উপদেষটার পদত্যাগ চেয়েছেন তারা।
কাশেম আরও জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা একই সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচী এবং কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো— সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেওয়া, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি এবং শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন একাদশ থেকে দশম এবং ত্রয়োদশ থেকে দ্বাদশ গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সহকারী শিক্ষকরা।
অন্যদিকে, সহকারী শিক্ষকদের আরেক অংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি আদায়ের সময়সীমা দিয়েছে। দাবি পূরণ না হলে তারা ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।
এ ছাড়া ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে অগ্রগতি না হলে পরীক্ষা বর্জন ও আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।