দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চলগুলোর বাসিন্দাদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় তাদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ‘লোকাল অ্যাডাপ্টেশন প্ল্যান অব অ্যাকশন (লাপা) ডেভলপমেন্ট’ নামে জাতীয় পর্যায়ের একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটির (আইআরসি) সঙ্গে যৌথভাবে এই প্রকল্পে কাজ করছে সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস), উত্তরণ ও জাগো নারী এনজিও।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য, বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীনে গৃহীত প্রকল্প ‘ন্যাশনাল এডাপটেশন প্ল্যান’এর অংশ হিসেবে, জেলা পর্যায়ে দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চলগুলোর বাসিন্দাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা, যা দুর্যোগ মোকাবিলায় তাদের সাহায্য করা।
একদিনের এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোসা. মহসিনা আক্তার বানু, আইআরসির কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিনা রহমান, সিএনারএসের চেয়ারম্যান ড. আক্তার হোসেনসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় উঠে এসেছে দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চলগুলোর বিভিন্ন সমস্যা এবং এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বিভিন্ন দিক, যেমন আঞ্চলিক পর্যায়ে দুর্যোগ বান্ধব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা, উন্নয়নমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর (নারী ও শিশু) কথা গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় রাখা, জলবায়ু বান্ধব কৃষি, দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ আর কয়েকটি বিষয়।
জেলা পর্যায়ে কীভাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এই কর্মশালায়; যা পরে সরকারের ন্যাশনাল অ্যাডাপ্টেশন প্ল্যানের অংশ হিসেবে বিবেচনা করার সুপারিশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই কর্মশালায় আরও অংশ নিয়েছেন পটুয়াখালী ও সাতক্ষীরার জেলা পর্যায়ের ব্যক্তিরা।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজ অঞ্চলের প্রধান সমস্যা হিসেবে তুলে ধরেন পানির লবণাক্ততার বিষয়টি। এটি সেখানকার ফসলি জমিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এছাড়াও দুর্যোগের আগে পূর্বাভাস আরও ব্যাপকভাবে প্রচার করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
পটুয়াখালীর বাসিন্দা শাহিদা বলেন, ‘আমাদের চর এলাকায় প্রতি বছর বন্যার সময় সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব। এমন অনেক দিন গেছে, যখন বৃষ্টির পানি ধরে আমরা পান করেছি। চারিদিকে পানি, কিন্তু খাওয়ার জন্য পানি পাওয়া যায় না।’
২০২১ সালের ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাইমেট রিস্ক ইন্ডেক্স’ অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকির তালিকায় সপ্তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে ন্যাশন্যাল অ্যাডাপ্টেশন প্ল্যান (নাপা) প্রকল্প হাতে নেয় বাংলাদেশ সরকার, যা ২০৫০ পর্যন্ত চলবে।