মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা শনিবার (৭ জুন) দেশজুড়ে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যতা, নামাজ এবং কোরবানির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে।
দেশের প্রতিটি জেলার ঈদগাহ ও মসজিদে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। বড় বড় জামাতে ছিল উপচে পড়া ভিড়, যা এই ধর্মীয় উৎসবের ঐক্য ও আনুগত্যের চেতনাকে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব, সৈয়দ আলাউদ্দিন আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরী।
নামাজ শুরুর আগেই মুসল্লিদের ঢল নামে মূল ফটকের সামনে। ভোর থেকেই হাজারো মানুষ ঈদের জামাতে অংশ নিতে ভিড় জমায়। নামাজ শেষে ইমাম খুতবা দেন। পরে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন তিন। মোনাজাত শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন। একই স্থানে সকাল সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেন মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আহমদুল হক।
বাগেরহাটে, ঐতিহাসিক ও ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্য ‘ষাটগম্বুজ মসজিদে’ ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ৮টা ও পরে তৃতীয় ও শেষ জামাতও অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেটে, প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায় ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ ময়দানে। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেট শহরে মোট ৩৯০টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে— এর মধ্যে ১৪২টি খোলা জায়গায় এবং ২৪৮টি মসজিদে। পুরো জেলাজুড়ে মোট ২ হাজার ৫৫১টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বরিশালে, প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায় হেনায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। এই জামাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা অংশগ্রহণ করেন।
খাগড়াছড়িতে, ধর্মীয় উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করেন মুসলিমরা। জেলার প্রধান ঈদ জামাত সকাল ৮টায় খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদের দিন দেশজুড়ে পশু কোরবানি, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে মিলনমেলা এবং গরিব-দুঃখীদের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়— যা ঈদুল আজহার মূল চেতনাকে ধারণ করে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারি ছিল। পুলিশ, পর্যটন পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা ঈদগাহ এলাকায় মোতায়েন ছিলেন।
তবে ঈদের জামাতের পর রাজধানীর কিছু কিছু জায়গায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। ফলে পশু কোরবানিতে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে নগরবাসীকে। অবশ্য আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই এ বিষয়ে সতর্ক করেছে, যাতে বৈরি আবহাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারেন দেশবাসী।