প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগে তিনটি যোগ্যতা ও ছয়টি অযোগ্যতার মানদণ্ড নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ শনিবার গেজেট আকারে প্রকাশ করে জাতীয় সংসদ।
যোগ্যতার তিনটি মানদণ্ড হলো:
আইন অনুযায়ী, সিইসি ও ইসি হওয়ার জন্য অবশ্যই তিনটি যোগ্যতা থাকতে হবে। সেগুলো হলো- তাদের অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে; বয়স ন্যূনতম ৫০ বছর বছর হতে হবে এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
অযোগ্যতার ছয়টি মানদণ্ড হলো:
কোনো আদালত কর্তৃক কোনো ব্যক্তিকে ‘উন্মাদ’ ঘোষণা করা হলে; 'দেউলিয়া' ঘোষণার পর কারাগার থেকে মুক্তি পাননি; বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করে অন্য কোনো দেশে নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে; নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হলে এবং কোনো আইন দ্বারা বা তার অধীনে এই ধরনের পদের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হলে তিনি সিইসি বা ইসি হওয়ার জন্য ‘অযোগ্য’ বিবেচিত হবেন। এছাড়া একজন ব্যক্তি একবার সিইসি পদে অধিষ্ঠিত হলে তিনি ইসি পদের জন্য যোগ্য হবেন না। কিন্তু কোনো ব্যক্তি ইসি পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তাকে সিইসি নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হতে পারে।ে
আরও পড়ুন: ইসি গঠন বিল সংসদে কণ্ঠভোটে পাস
সার্চ কমিটি
আইন অনুযায়ী, সিইসি ও ইসির শূন্য পদের বিপরীতে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশের জন্য রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন।
কমিটির সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক। অন্য পাঁচ সদস্য হবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত একজন নারীসহ দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের বিলের প্রতিবেদন সংসদে পেশ
কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে সিইসি ও অন্যান্য ইসি পদে নাম সুপারিশ করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহ্বান করতে পারবেন।
প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে দুটি করে নাম সুপারিশ করবে।
সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
পটভূমি
গত ২৭ জানুয়ারি সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদের অধীনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়। এরপর ২৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি বিলটিতে সম্মতি দেন।
সিইসি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হচ্ছে।
এ সংক্রান্ত আইন না থাকায় অতীতে রাষ্ট্রপতি সিইসি ও অন্যান্য ইসি নিয়োগ দিতেন।
আরও পড়ুন: ইসি আইনের খসড়া না পড়েই বিএনপি’র মন্তব্য ‘না বলা বাতিকের' প্রমাণ: তথ্যমন্ত্রী