সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, ২,৩২৭ পৃষ্ঠার নথি বিকাল ৫টার দিকে পৌঁছায়।
এর আগে ডেথ রেফারেন্সের কপি লাল কাপড়ে মুড়িয়ে ফেনীর আদালত থেকে হাইকোর্টে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন ইউএনবির ফেনী প্রতিনিধি।
দুপুর ২টার দিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বিচারিক আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. সামছুদ্দিন পুলিশ পাহারায় কপি নিয়ে ফেনী থেকে রওনা হন।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হাফেজ আহমেদ বলেন, ‘ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামনুর রশিদের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য মামলার নথি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে।’
নুসরাত হত্যা মামলার বাদীর আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, ৩৭৪ ধারায় বলা হয়েছে যে বিচারিক আদালত যখন মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে, তখন হাইকোর্ট বিভাগের কাছে কার্যক্রম পেশ করতে হবে এবং হাইকোর্ট বিভাগ অনুমোদন না করা পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করা হবে না।
তিনি জানান, নুসরাত হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উচ্চ আদালতে শুনানির জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এখন হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স এবং নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল শুনানি হবে। এরপর কোনো পক্ষ হাইকোর্টের রায়ে সংক্ষুব্ধ হলে তা আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়াবে।
নুসরাত জাহান রাফিকে হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় বৃহস্পতিবার ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। সেই সাথে আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এ টাকা আদায় করে নুসরাতের পরিবারকে দেয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি হলেন- মাদরাসা অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ্দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), মোহাম্মদ শামীম (২০), রুহুল আমিন (৫৫) ও মহিউদ্দিন শাকিলকে (২০) ।
উল্লেখ্য, নুসরাত নিজ মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনলে তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। এতে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করা হলে নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়।
৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে মাদরাসায় যান নুসরাত। এ সময় তাকে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে ৮ এপ্রিল মামলা করেন। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।