পুরো সপ্তাহজুড়ে পতন দেখলো ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার। এক সপ্তাহে ঢাকার পুঁজিবাজারে সূচক কমেছে ১০৮ পয়েন্ট।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শুরু হয়েছিল সূচকের উত্থান দিয়ে। সেই ধারা আর অব্যাহত থাকেনি লেনদেনের শেষ পর্যন্ত।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ২০৫ পয়েন্ট, যা এ সপ্তাহে লাগাতার পতনের ধাক্কায় কমে হয়েছে ৫ হাজার ৯৭ পয়েন্ট। এক সপ্তাহে ঢাকার বাজার ১০৮ পয়েন্ট সূচক হারিয়েছে।
প্রধান সূচকের পাশাপাশি শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ এবং বাছাইকৃত ব্লু-চিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ২ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১২৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ১৯০ কোম্পানি। ৮২ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত আছে।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ,বি এবং জেড প্রতিটি ক্যাটাগরিতেই দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল অপরিবর্তিত। ১২ কোম্পানির দরবৃদ্ধির পাশাপাশি দর হারিয়েছে ৯ কোম্পানি। ১৫ কোম্পানির ইউনিটের দামে আসেনি কোনো পরিবর্তন।
ব্লক মার্কেটে ২১ কোম্পানির ১৭ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। বিচ হ্যাচারি সর্বোচ্চ ১২ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৩৯ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩৯৬ কোটি টাকা।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে মিডল্যান্ড ব্যাংক। অন্যদিকে ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল।
শেয়ার কিনবে এসিআই
বিনিয়োগকারীদের থেকে ১৪ লাখ শেয়ার কেনার কথা জানিয়েছে এসিআই লিমিটেড। ডিএসইকে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ দৌলা বর্তমান বাজার মূল্যে ব্লক মার্কেটের মাধ্যমে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এ শেয়ার কেনার বার্তা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবারের ক্লোজিং প্রাইস অনুযায়ী, বাজারে এসিআই'র প্রতিটি শেয়ার ১৯৪ দশমিক ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ২১৪ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১১ টাকা হয়েছিল।
এ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটি ২০২৪ সালে বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা এ যাবৎকালে সর্বনিম্ন। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির প্রদত্ত লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল ৪০ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ছিল ৫০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: পতনে পর্যদুস্ত পুঁজিবাজার
কোম্পানিটির পরিচালকদের মধ্যে বাজার থেকে শেয়ার কেনার পরিমাণ বেড়েছে গত কয়েক মাস ধরে। ২০২৪ সালের জুনের হিসাব অনুযায়ী এসআইয়ের পরিচালকদের হাতে ৩৬ শতাংশ শেয়ার ছিল, যা চলতি বছর মার্চে বেড়ে হয়েছে ৪৩ শতাংশ।
বর্তমানে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে কোম্পানিটির ২১ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারের পরিমাণ ৩৫ শতাংশ শেয়ার আছে।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো টানা পতনে চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৬৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির দাম ছিল নিম্নমুখী। ১৯৮ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৬০, কমেছে ১০১ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে সিএসইতে। সারাদিনে মোট ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড। অন্যদিকে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে অ্যারামআইটি লিমিটেড।