প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ভবিষ্যতে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে বিমান চলাচলের প্রবেশদ্বার এবং সংযোগস্থল হবে।
বুধবার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের অগ্রগতি প্রদর্শনকালে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভৌগোলিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, রানওয়ে সম্প্রসারণ এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়নের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন।
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ব্যবহার করলে আন্তর্জাতিক রুটের দূরত্ব কমবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার একটি গেটওয়ে হয়ে উঠবে যেভাবে সবাই এখন দুবাইকে বিমানের রিফুয়েলিংয়ের গেটওয়ে হিসাবে ব্যবহার করে।’
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক রুটে জ্বালানি সরবরাহের জন্য কক্সবাজার অল্প দূরত্বের মধ্যে হবে এবং এয়ারলাইন্স বেশি দূর যেতে পারবে না। তারা কক্সবাজার থেকে সরাসরি এই সুবিধা নিতে পারেন।
তিনি উল্লেখ করেন, কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে জ্বালানি সেবা থেকে দেশের আয় বাড়বে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে সবকিছুই ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে।
তিনি বলেন, ‘মানুষ দ্রুত এবং সহজে আন্তর্জাতিক মানের সেবা পেতে সক্ষম হবে। তাই বিমানবন্দরের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব একটি বিদেশি কোম্পানিকে দেয়া হবে।’
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান 'হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সম্প্রসারণ' প্রকল্পের হালনাগাদ তথ্য প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।
আগামী বছরের অক্টোবরে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে বলে জানান তিনি।
এ পর্যন্ত তৃতীয় টার্মিনালের ৬১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী বছরের অক্টোবরের মধ্যে মোট প্রকল্পের ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ হবে। কিছু ছোটখাটো কাজ বাকি থাকবে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালের একুশে পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকায় বাড়তে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান বলেন, খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও দক্ষতা বাড়বে।
ফরাসি রাডার প্রস্তুতকারক থ্যালেসের রাডার ইনস্টলেশন নিয়েও আলোচনা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত রাডার স্থাপনের কাজ শেষ করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, নতুন রাডার স্থাপনের ফলে এভিয়েশন সেক্টরে আয় বাড়বে এবং এর থেকে ভালো আয় আসবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আকাশসীমার উপর দিয়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলো ট্র্যাক করা সহজ হবে এবং তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের ফি নেয়া সহজ হবে।’
সিভিল এভিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, নতুন রাডার স্থাপনের প্রকল্পটি ২০২১ সালের অক্টোবরে নেয়া হয়েছিল এবং ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এটি সম্পূর্ণ করার সময়সীমা ছিল।
তবে তৃতীয় টার্মিনাল এবং রাডার দু’টি একই সময়ে উদ্বোধন করা হবে বলে সূত্র জানায়।
সূত্র আরও জানায় যে রাডারের ক্ষমতা ভারত ও মিয়ানমার থেকে পাওয়া সমুদ্রসীমা পর্যন্ত প্রসারিত হবে। বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে আরও আধুনিক ও নিরাপদ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।
আরও পড়ুন: মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবিত ও বিকাশে গবেষণা অত্যাবশ্যক: প্রধানমন্ত্রী