দিনটি উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও তাদের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন এবং অন্যান্যা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগ আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও আলোচিত্র প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
জন্মদিনে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানানো এবং তার বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার জন্মদিনের এ সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক থাকায় প্রতিবারের মতো এবারও তার অনুপস্থিতিতে দেশে জন্মদিন পালিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে (কেআইবি) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
পাশাপাশি, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটি রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির জন্মদিনে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বর্ণিল শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শোভাযাত্রাটি মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি মাসব্যাপী আলোচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বপ্ন-সারথী’ শীর্ষক এ প্রদর্শনী বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন, সংগ্রাম, ত্যাগ ও অর্জনসহ বিভিন্ন সময়ের ছবি প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।
এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে দেশব্যাপী মসজিদ, মন্দির ও গির্জাগুলোতে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখরসহ আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ৫ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ শেখ হাসিনা। তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সরকারি ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজের ছাত্রসংসদের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি এ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বছর সভাপতি ছিলেন।
শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন সদস্য এবং ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই শেখ হাসিনা সকল গণআন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা সে সময় পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় বেঁচে যান। পরবর্তীকালে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে ৬ বছর ভারতে অবস্থান করেন। ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ডে থেকে তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে অবশেষে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পর ৭ জানুয়ারি ২০১৯ শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের পর ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মত এবং ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। তার নেতৃত্বধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সে বছরের ১২ জুনের সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল।